Pages

Subscribe:

Ads 468x60px

Saturday, January 5, 2013

শীতে স্বাস্থ্যসুরক্ষা










শীতকালে আমাদের অনেকেরই বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে থাকে। একটু সতর্ক থাকলে এগুলো যেমন প্রতিরোধ করা যায়, তেমনি আক্রান্ত হয়ে গেলে প্রতিকারও করা যায়। তবে সমস্যাগুলো কষ্ট দিতে পারে, ভোগাতেও পারে বেশ।

সর্দি-কাশি :-

শীতকালে ঠান্ডা লাগা বা সর্দি অতিসাধারণ অথচ খুবই ছোঁয়াচে একটি রোগ। বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের মাধ্যমে এ রোগ হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয় রাইনো ভাইরাসের মাধ্যমে। ঘন ঘন হাঁচি হওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, সঙ্গে একটু-আধটু কাশি ও সামান্য জ্বর—এগুলো সর্দির লক্ষণ।
সর্দি-জ্বরের ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর কয়েক দিনের মধ্যেই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সাধারণত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে রোগটি ভালো হয়ে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে রোগের জটিলতা দেখা দেয়। শিশুদের ফুসফুসে ইনফেকশন হয়ে ব্রংকিওলাইটিস, নিউমোনিয়া, মধ্যকানের প্রদাহ ইত্যাদি হতে পারে। বড়দের হতে পারে সাইনোসাইটিস। সর্দিতে আক্রান্ত রোগীর শরীর থেকে ভাইরাসগুলো সুস্থ মানুষের দেহে খুব দ্রুত ছড়াতে পারে। রোগীর হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ভাইরাসগুলো বাতাসে ভেসে অন্য মানুষের শরীরে ঢোকে। রোগীর ব্যবহূত রুমাল বা হাতের মাধ্যমেও এটা ছড়াতে পারে।


চিকিৎসা: সাধারণত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে রোগটি কোনো ওষুধ ছাড়াই ভলো হয়ে যায়। তবে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন। পানি পান করতে হবে পর্যাপ্ত। নাকের সর্দি নিয়মিত পরিষ্কার করে নাসারন্ধ্র খোলা রাখতে হবে। গরম পানির ভাপ বা নাকের ড্রপ নাকের ছিদ্র খোলা রাখতে সহায়তা করে। ঘরে সিগারেটের ধোঁয়া বা রান্নাবান্নার ধোঁয়া সর্দির রোগীদের জন্য বাড়তি উপদ্রব। ঘরে ধূমপান বন্ধ করতে হবে। নাক থেকে পানি ঝরা কমাতে প্রয়োজন অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ। আর ব্যথা ও জ্বরের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। শিশুদের ব্রংকিওলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ যেকোনো জটিলতায় অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
প্রতিরোধ: নিয়মিত হাত ধোয়া, কনুই ভাঁজ করে তাতে হাঁচি দেওয়া, তা না হলে রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দেওয়া, নাক ঝেড়ে যেখানে-সেখানে নাকের ময়লা না ফেলা—সর্দি প্রতিরোধে এসব পদক্ষেপ অবশ্যই নিতে হবে।


ইনফ্লুয়েঞ্জা :-
ফ্লু নামেও বেশ পরিচিত। শীতকালে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এটি ভাইরাসজনিত একটি রোগ; তবে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে আলাদা। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দিয়ে এ রোগ হয়। শরীরে জীবাণু ঢোকার এক থেকে চার দিনের মধ্যেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, খুসখুসে কাশি, শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, বমি, দুর্বলতা ইত্যাদি। সাধারণ সর্দি-কাশির চেয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণগুলো গুরুতর। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে রোগটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। বেশি দুর্বলও করে ফেলে তাদের। এটি থেকে সাইনোসাইটিস, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদিও হতে পারে।
সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাসের মতো ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাসও হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, গামছা, তোয়ালে বা অন্য যেকোনো জড় বস্তুতে লেগে থাকা জীবাণু দিয়েও অন্য মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।

রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারে এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে। আক্রান্ত ব্যক্তি অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে; এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি তার শরীরে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ দেখা দেওয়ার এক দিন আগে থেকেই অন্যকে সংক্রমণ করা শুরু করতে পারে। মহামারি আকারে ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দেয় অনেক সময়ই।


চিকিৎসা:---  ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। হাঁচি-কাশির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন এবং জ্বর ও শরীর ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি হলে কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন পড়ে; সঙ্গে প্রচুর পানি বা তরল খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক।
প্রতিরোধ: ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধ করা জরুরি। সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা যেতে পারে অনেকাংশে। প্রতিরোধ করা যেতে পারে টিকার মাধ্যমেও। তবে টিকা দিতে হবে প্রতিবছরই। কারণ, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস তাদের গঠন প্রায়ই পরিবর্তন করে এবং বিবর্তিত হয়।

গলায় খুসখুসি :-
ঠান্ডার জন্য গলা খুসখুস করে এবং কাশি হয়। অনেক সময় জীবাণুর সংক্রমণ হয়। তখন একটু জ্বরও হয়। হালকা গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার গড়গড়া করলে উপকার পাওয়া যাবে। গলায় যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে, সে জন্য মাফলার পেঁচিয়ে রাখা ভালো।


হাঁপানি:-- শীতকালে অ্যালার্জিজনিত হাঁপানির প্রকোপ বেড়ে যায়। শীতের শুষ্ক মৌসুমে আমাদের চারপাশে পরিবেশে অ্যালার্জেন ও শ্বাসনালির উত্ত্যক্তকারী কিছু বস্তু বেশি থাকে। ঘরের ভেতরে থাকে ঘরোয়া জীবাণু—মাইট, ছত্রাক ও পোকামাকড়ের বিষ্ঠা। তা ছাড়া শীতের দিনে ঘরের দরজা-জানালা অন্য মৌসুমের চেয়ে একটু বেশিই বন্ধ রাখতে হয় বলে ঘরের রান্নাবান্নার ধোঁয়া আটকা পড়ে বেশি। মাটি ও বাতাসে ফুলের রেণু আর ধুলাবালু থাকে খুব বেশি। এসবের কারণেই শীতকালে হাঁপানি বেড়ে যায়।

প্রতিরোধ:-- বাড়িঘরের অ্যালার্জেন—যেমন ঘরদোরের ধুলা বালি, মাইট ইত্যাদি—ঝেড়ে-মুছে পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরে আলো-বাতাস বইতে দিতে হবে। বাইরে চলাচলের সময় মুখোশ ব্যবহার করতে হবে। ঘন ঘন হালকা গরম পানি বা স্বাভাবিক পানি পান করতে হবে; এতে শ্বাসনালিতে তৈরি হওয়া শ্লেষ্মা পাতলা থাকবে। তাতে কাশি ও শ্বাসকষ্ট কমবে। চিকিৎসকের পরামর্শমতো কিছু ওষুধ সেবন করেও হাঁপানি প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

Afrooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooz

Drug Index

Social Icons

 
Blogger Templates