Pages

Subscribe:

Ads 468x60px

Thursday, July 24, 2014

আপনার সন্তানকে ‘টাকা’ ব্যবহারের সঠিক শিক্ষা দিতে শুরু করুন




অর্থই যেনো অনর্থের মূল কারণ না হয় সেজন্য টাকা-পয়সা সঠিকভাবে ব্যবহারের কিছু পদ্ধতি রয়েছে। জীবনে টাকা-পয়সার সর্বাধিক সুষ্ঠু ব্যবহার কী হতে পারে সে সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। উন্নত দেশগুলোতে অর্থের যথার্থ ব্যবহারের শিক্ষাদান শিশুকাল থেকেই শুরু করা হয়। সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত এ পদ্ধতি অনুসরণ করা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলার এমনই একটি বই ‘গেট আ ফিনানসিয়াল লাইফ’। এর লেখক বেথ কবলাইনার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ। তাছাড়া ইউএস প্রেসিডেন্টের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তিনি। তাঁর অপর একটি বই ‘মানি অ্যাজ ইউ গ্রো’ থেকে আপনারা সন্তানের বয়েসের ভিত্তিতে অর্থের ব্যবহার সংক্রান্ত নানা বাস্তবমুখী উপদেশ পাবেন।
অর্থের ব্যবহার সংক্রান্ত শিক্ষা নানা বয়েসে ভিন্নমুখী হয়ে থাকে। আপনাদের জন্য গবেষকদের কিছু শিক্ষা এখানে তুলে ধরা হল। আশা করি জীবনের অতিব জরুরি এই টাকা-পয়সার সঠিক ব্যবহার সম্বন্ধে আপনার সন্তানকে সচেতন করতে সাহায্য করবে এই প্রতিবেদন।
কবলাইনারের মতে অর্থ জমানো এবং খরচের শিক্ষা মাত্র তিন বছর বয়েস থেকেই শিশুরা পেতে পারে। ব্রিটেনের মানি অ্যাডভাইস সার্ভিসের তত্ত্বাবধানে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের গবেষণায় দেখা গেছে, সাত বছর বয়েস থেকেই মানুষের অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় অভ্যাস গড়ে উঠতে থাকে। কাজেই যতো দ্রুত আপনার সন্তান এসব শিক্ষা পাবে, সে ততো দ্রুত অর্থের ফলপ্রসূ ব্যবহার ঘটাতে পারদর্শী হয়ে উঠবে।
বয়স যখন ৩ থেকে ৫ বছর: এ বয়েসী শিশুদের মূল শিক্ষাটি হল- ‘তুমি যা কিনতে চাও তার জন্যে তোমাকে অপেক্ষা করতে হতে পারে’। কবলাইনারের মতে, এ শিক্ষাটি সব বয়েসী মানুষের জন্যই বাস্তবতা। শিশুদের বোঝাতে হবে যে, সে যা চায় তার জন্য কিছু সময় ব্যয় করতে হবে। কারণ প্রয়োজনীয় টাকা তার জমাতে হবে। এর মাধ্যমে অপেক্ষা করে পরিতৃপ্তি লাভের মতো বড় একটি গুণ শিশুরা অর্জন করে। আবার তারা এ শিক্ষাটিও পায় যে, কোনো কিছু এতো দ্রুত শুরু করতে নেই।
আপনার করণীয়:
১. প্রথম কাজটি হবে তাকে বোঝানো। শিশুটি কোনো কিছু চাইলে তাকে সুন্দরভাবে বোঝান যে, জিনিসটি পেতে হলে তাকে টাকা জমাতে হবে এবং এ জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
২. আপনার শিশুকে টাকা জমানোর জন্য তিনটি মাটির ব্যাংক কিনে দিন। একটিতে লিখা থাকবে ‘জমা’, আরেকটিতে ‘খরচ’ এবং অন্যটিতে ‘অংশগ্রহণ’। তাকে বোঝান, বড় কিছু কিনতে চাইলে জমার ব্যাংকটিতে টাকা রাখতে হবে। আর সব সময় ছোট কেনাকাটা যেমন- চকোলেট বা জুস ইত্যাদি কেনার জন্য খরচের ব্যাংকে টাকা থাকবে। আর বন্ধুদের সাথে কিছু কিনতে হলে বা সবাই মিলে একসাথে কিছু করতে অংশগ্রহণের ব্যাংকে টাকা রাখতে হবে।
৩. এমন কিছু সে দাবি করতে পারে যা কেনার সাধ্য তার নেই বা আপনারও সে পরিমাণ অর্থের যোগান দেয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে তা কিনতে হলে তাকে ওই পরিমাণ অর্থ জমাতে হবে। এজন্য হয়তো অনেক সময় লেগে যাবে। তার সাথে কথা বলে আপনারা ঠিক করুন, অন্য কিছু কেনা যায় কিনা। কারণ সময়ক্ষেপণের বিষয়টি বেশি লম্বা করাটা উচিত নয়। নিজের জমানো টাকায় কেনা সম্ভব নয় দেখলে তার নিজেরও মত পরিবর্তন হতে পারে। আর জমানো সম্ভব হলে আপনার সন্তানের পরিতৃপ্তি হবে দেখার মতো।
বয়স যখন ৬ থেকে ১০ বছর: এ বয়েসীদের মূল শিক্ষাটি হল- ‘তোমাকে ঠিক করতে হবে যে, কিভাবে টাকাটা খরচ করতে চাও’। সন্তানকে বোঝান, টাকার পরিমাণ সীমিত। কাজেই এই টাকা খরচ করতে হবে চিন্তা-ভাবনা করে। কারণ একবার খরচ করে ফেললে পরবর্তি খরচের জন্য টাকা থাকবে না। এ বয়েসীদের ওই তিনটি ব্যাংকে টাকা জমানোর সাথে আপনাকে পরামর্শকের ভূমিকায় থাকতে হবে বলে মনে করেন কবলাইনার। এ সময় জমা, খরচ এবং অংশীদার ব্যাংকে টাকা জমানোর জন্য সন্তানের নির্দিষ্ট লক্ষ্য জুড়ে দিতে হবে। এসব নিয়ে আপনি তার সাথে আলোচনা করবেন। তাছাড়া এখন কিছুটা বড় ধরনের অর্থ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তাকে জড়াতে হবে।
আপনার করণীয়:
১. কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে তার সাথে কথা বলুন। যেমন- জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের একটি জুস কিনতে গেলে ৫ টাকা বেশি খরচ হয়। কিন্তু একই স্বাদের অন্য জুস কিনলে এ টাকাটা বেঁচে যাবে। কাজেই কোনটা করলে ভাল হবে? এ প্রশ্নটি নিয়ে আলাপ করুন। অথবা প্রতিদিন কিনতে হচ্ছে এমন একটি জিনিস একটি করে না কিনে একবারে বেশি পরিমাণে কিনলে ক্রয়মূল্য কম পড়বে- এমন হিসাব সম্পর্কে তাকে ধারণা দিন।
২. মার্কেটে গেলে তার হাতে অল্প কিছু টাকা ধরিয়ে দিন। ধরুন ৫০ টাকা দিয়ে তাকে বলুন তার যা খেতে ইচ্ছা করছে তা এই টাকার মধ্যে কিনতে। এতে করে সে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সিদ্ধান্ত নিতে অভ্যস্ত হবে।
৩. শপিংয়ে গেলে কেনাকাটার ফাঁকে নানা প্রশ্ন করে তার জবাবটি শুনুন। যেমন- এ জিনিসটি কি আসলেও কেনার প্রয়োজন আছে? এটা না কিনে ধার করা যায় না? অন্য কোথাও কি এটা কম দামে পাওয়া যেতে পারে? ইত্যাদি প্রশ্ন তার মধ্যে নানামুখী উপায় নিয়ে চিন্তা করতে শেখাবে।
বয়স যখন ১১ থেকে ১৩: মূল শিক্ষাটি হল- ‘তুমি যতো দ্রুত টাকা জমাতে পারবে, তোমার বিভিন্ন চাহিদা মেটানোর জন্য ততো দ্রুত টাকা তৈরি থাকবে’। এ বয়েসে তাকে টাকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সম্পর্কে জ্ঞান দিন। তাকে কমপাউন্ড ইন্টারেস্ট নিয়ে বোঝান। তার এখনকার জমানো এবং আগের জমানো একসাথে হয়ে কি ধরনের লাভ হচ্ছে তার ধারণা দিন।
আপনার করণীয়:
১. কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট সম্পর্কে বোঝাতে গাণিতিক উদাহরণ টানুন। যেমন- যদি তুমি ১৫ বছর বয়েস থেকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা জমাও, তাহলে তোমার ৫০ বছর বয়েসে মোট ৪২ হাজার হবে। আর যদি এ টাকা তুমি ৩০ বছর বয়েস থেকে জমানো শুরু করো তাহলে মাত্র ২৪ হাজার টাকা জমবে।
২. ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট এবং এর থেকে বাড়তি আয়ের বিষয়টি তার ধারণায় দিন। তবে সুদ সংক্রান্ত বিষয়ের সাথে ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও তাকে অবগত করা উচিত।
৩. কবলাইনারের মতে, এ বয়েসে ছেলে-মেয়েরা পছন্দের জিনিস কিনতে চায়। এ ক্ষেত্রে তাদের বড় কিছু করতে ছোট কিছু ত্যাগ করার শিক্ষা দিন। যেমন- সে যদি স্কুল থেকে বের হয়ে প্রতিদিন একটি করে চিপস খায়, তবে তাকে হিসেব দিয়ে বুঝিয়ে দিন যে এই চিটসের টাকা জমিয়ে সে কিছু দিন পর বড় একটি জিনিস কিনতে পারবে।
বয়স যখন ১৪ থেকে ১৮ বছর: এ বয়েসের মূল শিক্ষাটি হল- ‘কোন খাতে খরচ করলে তার বিপরীতে কী আসতে পারে’। ধরুন সে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যাচ্ছে। তার পছন্দের কোনো বিষয়ে পড়ার খরচ নিয়ে আলোচনা করুন। তাকে বোঝান, আগ্রহের সাথে তাল মিলিয়ে কোন বিষয় নিয়ে পড়লে কত টাকা খরচ হবে এবং ওই বিষয় নিয়ে পড়ে সে ভবিষ্যতে কতো টাকা উপার্জন করতে পারবে। তবে তার ইচ্ছাকে নিরুৎসাহিত করবেন না।
এ সময় তাকে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজের উৎসাহ দিন। সেখান থেকে তার উপার্জন হবে। এর সাহায্যে সে তার লিখা-পড়ার জন্যে কিছু করতে পারবে। তবে শুধুমাত্র পড়াশোনার ক্ষতি না করে এসব কাজ চালানো যেতে পারে।
বয়স যখন ১৮ বছরের বেশি: মূল শিক্ষাটি এমন- ‘তোমার একটি ক্রেডিট কার্ড থাকতে পারে যদি মাস শেষে ঠিকমতো টাকা জমা দিতে পারো’।
পার্টটাইম চাকরি থেকে উপার্জিত টাকা ব্যবহারে তার কিছু ভাল অভ্যাস গড়ে উঠবে। তাছাড়া এখন তার একটি ভাল চাকরি থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার সাথে নিজের টাকার সদ্ব্যবহার করতে শিখবে সে। এর মাধ্যমে জরুরি অবস্থায় টাকার প্রয়োজন যেমন মিটবে, তেমনি এই উৎসকে সুষ্ঠু উপায়ে ধরে রাখার অভ্যাস তাকে আরো বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তুলবে।

বেশি সময় ঘুমালেই ডায়াবেটিস হবার আশঙ্কা!







ছোট্ট একটু ঘুম। সারা দিনের ব্যস্ততার ফাঁকে ঝিম ঝিম করতে থাকা মাথাটাকে একটু বিশ্রাম দেওয়া। ব্যথায় টনটন করতে থাকা শরীরটাকে একটু এলিয়ে দিয়ে চোখ বোজা। দিনের বেলায় এই ছোট্ট ঘুমটা দিতে শরীরের যতই আরাম লাগুক, এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবটা আসলে নেতিবাচক। চিন্তাধারা গুছিয়ে নেবার ক্ষেত্রে কিছুটা কাজে লাগে এই ঘুম, কিন্তু বেশি ঘুমের ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন জটিলতা, কমে যেতে পারে আয়ু। আর এর থেকে ডায়াবেটিস হবার বেশ ভালো সম্ভাবনা আছে।
দিবানিদ্রা নিয়ে গবেষণা
Sleep Medicine নামের জার্নালে দেখা যায়, নেদারল্যান্ডের লেইডেন ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা মানুষের শরীরের ওপরে দিবানিদ্রার প্রভাব নিয়ে বিশদ পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। বিভিন্ন সময়ে ঘুমের ফলে শরীর বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়। আর যারা দিবানিদ্রায় অভ্যস্ত তাদের সাথে তুলনা করা হয় যারা দিনে ঘুমান না তাদের স্বাস্থ্যের।
গবেষণার খুঁটিনাটি
২৭ হাজার অবসরপ্রাপ্ত চৈনিক নারী-পুরুষের দিবানিদ্রার অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হয় এই গবেষণায়। এদেরকে চার ভাগে ভাগ করা হয় ঘুমের অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে। দিনের বেলায় শুন্য মিনিট (অর্থাৎ একেবারেই ঘুমান না) থেকে ৬০ মিনিট বা এক ঘণ্টার বেশি ঘুমান কারা কারা সেটা দেখা হয়।
অংশগ্রহণকারীদের মাঝে দুই তৃতীয়াংশের বেশি-মোটামুটি সাড়ে আঠারো হাজার মানুষ- জানান তারা নিয়মিত দিবানিদ্রা দেন। এরা রাতে কতটা ঘুমান, ধূমপান করেন কিনা, ব্যায়াম কিরকম করেন ইত্যাদি ব্যাপারও বিবেচনায় আনা হয়। এসবের পরেও দেখা যায়, যারা দিনের বেলায় নিয়মিত এক ঘণ্টার বেশি ঘুমান তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি বেশি থাকে।
তবে এক ঘণ্টার কম, বিশেষ করে আধা ঘণ্টার কম যারা ঘুমান তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি দেখা যায় না। অনেকের কাজের সুবিধার্থে “পাওয়ার ন্যাপ” বা ১০-২০ মিনিটের ঘুম দেওয়া উপকারী। কিন্তু নিয়মিত বেশি সময় ধরে দিবানিদ্রা মোটেই ভালো নয়।
দিবানিদ্রার সংস্কৃতি
বাংলাদেশে রয়েছে ভাতঘুমের একটা সংস্কৃতি। চীনেও সেরকম দিবানিদ্রা দেবার প্রবণতা আছে এবং সেখানে দুপুরে ঘুমানোটা উপকারি বলে মনে করা হয়। এ কারনেই তাদের মাঝে দেখা যায় নিয়মিত দিনে ঘুমানোর অভ্যাস। সপ্তাহের ৪-৬ দিন যারা ঘুমান তাদের মাঝে ডায়াবেটিসের প্রবণতা ৫০ শতাংশ বেশি দেখা যায়, যারা কম ঘুমান তাদের তুলনায়।
দিবানিদ্রা থেকে কেন ডায়াবেটিস হয়?
জানা তো গেল দিনে কতটা ঘুমালে ডায়াবেটিস হবার ভয় থাকে, কিন্তু এর কারন কি? ডায়াবেটিস আসলে শরীরের কিছু জটিলতার সমষ্টি। এসব জটিলতা আসে ইনসুলিনের অভাব থেকে। শরীর যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন করে না, ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। আরও একটা কারন হতে পারে, শরীরের কোষের ওপর ইনসুলিনের প্রভাব হ্রাস পেতে পারে। এ থেকেও ডায়াবেটিস হয়। এগুলোর সাথে দিবানিদ্রার সম্পর্ক কি? দেখা যায়, রাতে যথেষ্ট ঘুম না হলে ডায়াবেটিস হতে পারে। আর দিনে ঘুমালে রাতের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটে। আমাদের শরীরের ঘড়ি ওলটপালট হয়ে যায়। অনেক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ব্যহত হয়, যার মাঝে রয়েছে ইনসুলিনের নিঃসরণ। কম সময় ঘুমালে এই প্রভাব পড়ে না। বেশি সময় ঘুমালেই তা থেকে ডায়াবেটিস হবার আশঙ্কা বাড়ে।

সহজেই লুকিয়ে ফেলুন নিজের বয়স !


অনেকেই আছেন চেহারায় বয়স লুকাতে চান। নিজেকে সদা তরুণ ও সদা প্রফুল্ল রাখতে চান। অন্যের সামনে নিজেকে কম বয়সী হিসেবে হাজির করতে চান। তাদের জন্য কিছু উপায় —
আপনার জন্য কিছু টিপস:
১. সপ্তাহে তিন দিন রাতে ভালো মানের মধু খান ও চেহারায় মেখে ধুয়ে ফেলুন।
২. অবশ্যই নিয়মমাফিক পানি পান করুন।
৩. অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন।
৪. পছন্দের বা বিনোদনমূলক স্থানগুলো ভ্রমণ করুন।
৫. ছলনা করবেন না। ভালোবাসায় ছলনা আপনাকে অচিরেই বুড়িয়ে দেবে।
৬. জীবনসঙ্গীর সাথে বেশি সময় কাটান।
৭. নিজের চেয়ে বয়স বেশি, এমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটান বেশি বেশি।
৮. ইতিবাচক চিন্তা করুন। নেতিবাচক চিন্তা চেহারায় বসয়ের ছাপ ফেলে।
৯. চোয়াল খানিক এলিয়ে থাকতে দিন। মুখের ভারিক্কি ভাব দূর হয়ে যাবে।
১০. শিরদাঁড়া সোজা রেখে দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যাস করুন।
১১. সুযোগ পেলে নাচুন।
১২. বেশি বেশি মন খুলে হাসুন।
১৩. মন থেকে ভালোবাসুন বই, গাছ, আকাশ।
১৪. সবসময় উদ্যমী ও প্রাণবন্ত থাকুন।
১৫. নিয়ম করে ঘুমান।
১৬. বৃক্ষজাত খাবার বেশি খান।
১৭. মুটিয়ে যাবেন না কখনই। মুটিয়ে যাওয়া মানেই নিজেকে বয়সী করে তোলা।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস :)
১৮. নিজের চেয়ে বয়স বেশি, এমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটান বেশি বেশি। তাতে নিজেকে কম বয়সী ভাবার আত্মবিশ্বাসটা অর্জন হবে

শীতে ঠোটের যত্নে যা করবেন



এখন শীতকাল। শীতের রুক্ষতা থেকে শরীরের তথা মুখের এই ছোট অংশ ঠোঁটও বাদ পড়ে না। শীতে ঠোঁট ফাটা একটি কমন সমস্যায় পরিণত হয়। আসুন জেনে নিই কীভাবে ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- শীতের আর্দ্রতার জন্য ঠোঁট ফেটে যায়। শীতে ঠোঁট ফেটে যায় না এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যাবে। শীতের এ রুক্ষতা থেকে রেহাই পেতে অধিক যত্নবান হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। খেয়াল রাখতে হবে ঠোঁট যাতে বেশিক্ষণ ধরে শুষ্ক বা শুকনো না থাকে। তাই দিনে কমপক্ষে ৩-৪ বার পেট্রলিয়াম জেলি, ক্রিম, গ্লিসারিন বা চ্যাপস্টিক জাতীয় তৈলাক্ত কিছু লাগানো অত্যন্ত জরুরি।
- অনেকেই ঠোঁট ভেজানোর জন্য জিভ ব্যবহার করে থাকেন। এটা নিতান্ত বদ অভ্যাস। কারণ ঠোঁট এতে নরম তো হয় না বরং ঠোঁট ফাটার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
- মেয়েদের সাজ অপরিপূর্ণ থেকে যায় যদি ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো না হয়। কিন্তু ফাটা ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপজেল বা লিপবাম জাতীয় কিছু লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে টিস্যু পেপার দিয়ে হালকা মুছে লিপস্টিক লাগানো উচিত।
- ফ্যাশন সচেতন মেয়েদের লিপস্টিক ছাড়া আজকাল চলেই না। তাই তাদের উচিত যেসব লিপস্টিক ঠোঁটের ক্ষতি করে না বা ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ লিপস্টিক ব্যবহার করা। ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত।
- যাদের ঠোঁটের রঙ কালো বা দাগ আছে তারা সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও লেবুর রস মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। ভালো কাজ দেবে।
- অনেকের ঠোঁট বেশি শুষ্ক। তাদের ঠোঁটই বেশি ফেটে থাকে। তাদের উচিত সঙ্গে সবসময় পেট্রলিয়াম জেলি রাখা। যখনই ঠোঁট শুষ্ক লাগবে তখনই পেট্রলিয়াম জেলি বা লিপবাম লাগাবেন।
- ঠোঁট ফাঁটার হাত থেকে রক্ষা পেতে পানির গুরুত্ব অনেক। প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করবেন। এতে শরীরের তথা ঠোঁটে পানির ঘাটতি থাকবে না। এ ছাড়া প্রতিদিন কিছু ফল খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গাজরের রস ফাটার হাত থেকে ঠোঁটকে ভালো রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখে।
- ঠোঁটের নরম ও তুলতুলে ভাব বজায় রাখতে নিয়মিত গ্লিসারিন, মধু ও গোলাপজল সমপরিমাণে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন ৩-৪ মিনিট। পরক্ষণে তুলা ভিজিয়ে মুছে নিয়ে লিপজেল বা ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিন। ভালো ফল পাবেন।


স্তনে ব্যথা কিংবা চাকার অনুভূতিঃ কখন যাবেন ডাক্তারের কাছে ?



স্তনে ব্যথা কিংবা শক্ত কোন পিন্ড অনুভব করার সমস্যাটির মুখোমুখি যে কোন মেয়েই জীবনের কোনো না কোনো সময় হয়েছে। সদ্য কৈশোর পার করা মেয়েটি তার স্তনের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন দেখে রীতিমত অবাক হয়, সেই সাথে স্তনে চাকা বা ব্যথার অনুভূতি তাকে ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার শংকায় শংকিত করে তোলে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ব্যথার বিষয়টি ডাক্তাররা বেশ ইতিবাচকভাবেই দেখেন, কারণ স্তনের কোন পিন্ড যদি প্রাথমিক পর্যায়েই ব্যথা করে তার মানে সেটি ক্যান্সার বা টিউমারে রূপ নেবার সম্ভাবনা খুব কম। স্তন ক্যান্সারে শুরুর দিকে একেবারেই ব্যথাহীন থাকে। তাছাড়াও যাদের বয়স তুলনামূলকভাবে কম (৩০ এর নিচে) তাদেরও ক্যান্সার হবার ঝুঁকি কম থাকে।
যেহেতু আমাদের দেশে নারীরা তাদের স্তনে কোনো সমস্যা হলে সেটি প্রকাশ করতে লজ্জা পান, তাই ঠিক কখন বা কি ধরণের সমস্যায় ডাক্তারের কাছে যেতে হবে সেই ব্যাপারটি জানা থাকা অত্যন্ত জরুরী। ফলে কাজটি যেমন সহজ হয়ে যায়, তেমনি আপনার অকারণ ভয় আর ঝুঁকির হারও কমে যায়।
স্তনে অস্বাভাবিকতা দেখার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার স্তনের স্বাভাবিক অবস্থা বা ঝুঁকিহীন সমস্যাগুলো কী কী হতে পারে-
  • -প্রথমত বয়ঃসন্ধির পর থেকেই মেয়েদের স্তন একটি ছোট ও অপরটি বড় থাকতে পারে। আকারের খুব বেশি অসামঞ্জস্য বা দৃষ্টিকটু পার্থক্য না থাকলে এ নিয়ে ভাবিত হবার কিছু নেই। তবে লক্ষ্য করুন দুই স্তনের একই জায়গাগুলোতে ঘনত্ব সমান কী না! হাত দিয়ে অনুভব করলে দেখবেন আপনার স্তনের উপরের ও বাইরের দিকের অংশ একটু শক্ত ও দড়ি পাকানো বলে মনে হয়; কারণ এই এলাকা থেকেই স্তনগ্রন্থির শুরু। এর থেকে যত নিচের দিকে নামতে থাকবেন চর্বির কারণে তত নরম অনুভূত হবে।
  • -এছাড়াও প্রতি মাসে মাসিকের ঠিক আগে আগে বা মাসিকের সময় স্তনে ব্যথা বা পিন্ড অনুভূত হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু লক্ষ্য রাখুন ব্যথা বা পিন্ডটি সেই মাসের মাসিকের পর বা পরবর্তি মাসিক পর্যন্ত থাকে কী না। যদি না থাকে তবে সেটা নিয়েও চিন্তিত হবার কোন কারণ নেই।

তাহলে কখন যাবেন ডাক্তারের কাছে?

  • -প্রথমেই দেখবেন স্তনে অনুভূত হওয়া চাকাটি কি একেবারেই নতুন কী না, এর আগের কোনো মাসিকের সময় এর অস্তিত্ব টের পাননি এমন হয়েছিল কী না।
  • -নতুন অনুভূত অস্বাভাবিক-অস্বস্তিকর পিন্ডটি যদি পরবর্তী মাসিক পর্যন্ত থেকে যায় বা তুলনামূলকভাবে বড় হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যান।
  • -স্তনের শক্ত পিন্ডটির বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করুন; যদি কয়েকদিনের মধ্যে খুব দ্রুত বড় হতে থাকে এবং ব্যথা না থাকে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।
  • -যদি দেখেন পিন্ডটি নড়ছে অর্থাৎ অনুভব করার সময় হাত থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে এবং তার নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বেশ দূরে চলে যাচ্ছে, তবে সেটা আপনার স্তনগ্রন্থির পরিবর্তন নির্দেশ করে, এমন পরিবর্তনে অনেক ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।
  • -স্তনের ত্বকে কোন ধরণের পরিবর্তন হলে, যেমনঃ ত্বক বেশি লাল হয়ে গেলে, কোঁচকানো বা বলিরেখার মত দাগ সৃষ্টি হলে, ত্বকে টোল খেয়ে গেলে কিংবা পাউরুটির শক্ত অংশের মত শক্ত হলে দেরি না করেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
  • -স্তনের বোঁটার বেশ কিছু পরিবর্তনেও সচেতন হতে হবে, উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- স্তনের বোঁটা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভেতরে ঢুকে গেলে কিংবা বোঁটা থেকে কোন ক্ষরণ নিঃসৃত হতে পারে। স্তন থেকে ক্ষরিত রস পানির মতো বা হলুদ, বাদামী, লালচে বিভিন্ন রঙেরও হতে পারে। এছাড়াও স্তনে ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমনে হঠাৎ করে প্রচন্ড ব্যথা ও পুঁজ হতে পারে, এই সময়ে ডাক্তারের ছুরির নিচে গিয়ে পুঁজের বিনাশ ঘটানোটা হবে বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।
বর্তমান সময়ে স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুর হার অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে এই হার অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। নারীরা একটু সচেতন হলেই এই ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা অসম্ভব কিছু নয়।

নিজের জীবন নিয়ে খুশি নয় ৩৬ শতাংশ নারী !

প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৩৬ জন মহিলার তাদের নিজের জীবন নিয়ে খুশি নন। ইংল্যান্ডের ইয়ং ওমেন্স ট্রাস্ট নামের একটি সংগঠন ১৬ থেকে ৩০ বছরের ১,০০০ জন মহিলার উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পেয়েছেন।
এই সমীক্ষা অনুযায়ী ৩৩% মহিলারা মনে করেন কর্মক্ষেত্রে এক কাজ করে তারা পুরুষদের তুলনায় কম মাইনে পান। ২০% মহিলার মতে সমাজে তারা তাদের মায়েদের তুলনায় কম সম্মান পান এবং ৬৬% মহিলার মতে তারা পেটের ও মানসিক অসুখে অত্যাধিক ভোগেন।
এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে ৫০% মহিলা বোঝেনই না কার ওপর বিশ্বাস করা উচিত। ৪০% মহিলা মাঝে মাঝেই নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। এক চতুর্থাংশ মহিলা মনে করেন সমস্যার সময় পাশে দাঁড়াবার কাউকে তারা পান না।
৫৮% মহিলা নিজেদের কর্মক্ষেত্রকে সুরক্ষিত বলেই মনে করেন। অন্যদিকে, ৪২% নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক, আর্থিক অবস্থা নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ভোগেন। ৫% উচ্চশিক্ষিত মহিলাও অবশ্য একাকীত্ব ও মানসিক অবসাদে ভোগেন। সূত্র: ওয়েবসাইট।


ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য কার্যকর কিছু পদ্ধতি



ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য আপনার চেষ্টার কমতি নেই। ডায়েট, এক্সারসাইজ কোনো কিছুই মানতে অসুবিধা নেই। তবু ঠিক যতটা চাইছেন ততটা রোগা হতে পারছেন না। ওজন কমাতে এমনই অনেক বিচিত্র সমস্যায় পড়তে হয়। তাই এবার আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা সাহায্য করতে কিছু পরামর্শ নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার বাইরের খাবার বলতে গেলে খাই না, তবুও ওজন বেড়ে যাচ্ছে বা নিয়ম করে জিমে যাই, তাও রোগা হতে পারছি না—এই ধরনের আক্ষেপ কি প্রায়ই বন্ধুবান্ধব বা চেনা পরিচিতদের মুখে শোনেন? আর ভাবেন আপনারও একই অবস্থা। আসলে আমরা প্রত্যেকে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে চাই, আর তার প্রথম শর্ত হচ্ছে নির্মেদ ঝরঝরে চেহারা। তার জন্য স্ট্রিক্ট ডায়েট, নিয়ম মেনে এক্সাইসাইজ কোনো কিছু করতেই আমরা পিছপা হই না। এক্সারসাইজ শুধুমাত্র ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে না, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি মেটাবলিজম ভালো করে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে। তবে ওজন কমানোর জন্য নিজের ইচ্ছেমতো এক্সাইসাইজ বা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। জানতে হবে সঠিক প্রক্রিয়া। নিজের শরীরের গঠন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে হবে সঠিক প্ল্যান। জীবনযাত্রায় রদবদল দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস বদলিয়ে বাড়তি ওজনের ওপর বড় প্রভাব ফেলা যায়। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন কথা শুনলেই মনে হয় সামনে পাহাড় সমান কাজ। আমরা অনেকেই মনে করি অতিরিক্ত নিয়মকানুন মেনে চললে জীবন ঠিকভাবে উপভোগ করা যায় না। বাস্তবে কিন্তু সবটাই অভ্যাসের ব্যাপার। ওজন কমানোর মানেই যে হাই ক্যালরি খাবার জীবন থেকে বাদ দিতে হবে বা এক্সারসাইজ করতে করতে সমস্ত সময় কাটিয়ে ফেলতে হবে তার কোনো মানে নেই। তবে ঝরঝরে থাকতে হলে আপনাকে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবার খান নতুন করে খাদ্যাভাস শুরু করুন, যাতে কিনা আপনার খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্যালরি কমাতে আপনার খাদ্যের রুচি, তৃপ্তি ও খাদ্য তৈরি সহজ পদ্ধতি কোনোটিই যেন বাদ না যায়। সবচেয়ে ভালো পথ হলো, আপনি বেশি বেশি করে উদ্ভিজ খাদ্য যেমন ফল, সবজি এবং আঁশ জাতীয় খাদ্য খান। সব সময় সচেষ্টা থাকুন যেন আপনার খাদ্য বৈচিত্র্যময় হয় এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে। কিছু এক্সারসাইজ নিজেকে সারাদিন ফিট, চনমনে রাখতে আর শরীরের কলকব্জাগুলোকে পরিপূর্ণভাবে সজাগ রাখতেই এক্সারসাইজ করতে হয়। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন কমাতে এক্সারসাইজ অপরিহার্য। আপনার শরীর যে ধরনের এক্সারসাইজ বহন করতে পারে বা তার সহ্য ক্ষমতা যে ধরনের এক্সারসাইজকে ধারণ করতে পারে সে রকম এক্সারসাইজই বেছে নিন, তবে এ সবকিছু করার জন্য আপনাকে মানতে হবে সহজ কিছু নিয়ম। নিয়ম ১ : ওয়ার্মআপ করার জন্য বাড়ির ছাদে বা সামনের রাস্তা থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসুন। যদি বাড়িতে ট্রেডমিল থাকে তাহলে ১০ মিনিট ট্রেডমিলে দৌড়াতে পারেন। একেবারেই জায়গা নেই এমন হলে আপনি আপনার রুমেই স্বাচ্ছন্দ্যে দৌড়াতে পারেন। নিয়ম ২ : এরপর পালা শুরু হবে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজের, অর্থাত্ এক্সারসাইজের মাধ্যমে পিঠ, ঘাড়, হাত এবং পা ভালোভাবে স্ট্রেচ করা দরকার। নিয়ম ৩ : এবার করুন কার্ডিওয়ার্ক আউট। একটু জোরে হেঁটে আসুন, আস্তে আস্তে গতি বাড়ান এরপর ১৫ মিনিট জগিং করতে পারেন। পুরো ৩৫ মিনিট কার্ডিওয়ার্ক করলে আপনার শরীরের জন্য যথার্থ উপকার পাবেন। নিয়ম ৪ :নিজেকে কোল্ডডাউন করতে ৫ মিনিট একদম আস্তে আস্তে হাঁটুন এখন ৫ মিনিট স্ট্রেচ করতে পারেন। কিছু সহজ এক্সারসাইজ বাড়িতে ট্রাই করতে পারেন। নিয়ম ৫ :সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত সোজা করে ঘরের সিলিংয়ের দিকে স্ট্রেচ করুন। এবার পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে যতটা সম্ভব জোরে লাফান। মাটিতে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার লাফান কোনো ব্রেক দিবেন না। টানা এক মিনিট লাফাতে থাকুন। এক মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার শুরু করুন। দশ-বারোবার এইভাবে লাফাতে পারেন। নিয়ম ৬ : মাটির উপর শুয়ে পড়ুন তারপর দুটি হাতের সাহায্যে মাটি থেকে উঠার চেষ্টা করুন। হাতে কোনো ভাঁজ যাতে না পড়ে। শুরুতে মোটামুটি ৫-১০টি পুশআপ দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় এক হাতের উপর ভর দিয়েও পুশআপ করা যায়। ওজন কমাতে শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হলো ক্যালরি পুড়ানো, কতটুকু ক্যালরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবচেয়ে ভালো সহজ উপায় হলো—প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা। আর ছোটখাটো সহজ উপায় হলো আপনার শারীরিক তত্পরতা আপনি বাড়ানো, যেমন লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন, গাড়িটা বাদ রেখে আশপাশের বাজারঘাট, অফিস হেঁটেই যান। তবে শুধু হাঁটলেই হবে না, জগিং বা সাঁতারও কাটতে হবে। এতে আপনার ক্যালরি বার্ন হবে বেশি। নিচে কী করলে কতটা ক্যালরি বার্ন হবে তার একটা চার্ট দেখানো হলো— এক্সারসাইজ ক্যালরি বার্ন হাঁটা :৭৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি জগিং :৮৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি বাইসাইকেলিং বা সাঁতার কাটা :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট এরোবিক এক্সারসাইজ গানের তালে তালে :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট দৌড়ানো :৩৫৫ ক্যালরি/ ৩০ মিনিট এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম  উঁচু ভবনে উঠার সময় লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।  রিকশার পরিবর্তে পায়ে হাঁটার অভ্যাস করুন।  নিয়মিত প্রতি মিনিটে ১১০ কদম হাঁটার অভ্যাস করুন ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত কমপক্ষে।  নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস করুন, যেমন কাপড় ধোয়া।  আপনার খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করুন। অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবারের পরিবর্তে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। যেমন ফলমূল, শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে।  খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখবেন না। (টেলিভিশন দেখতে দেখতে খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে)  ফাস্টফুডের পরিবর্তে বাসায় তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন।  রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন।  চিরস্থায়ী ওজন কমাতে দরকার সময় এবং চেষ্টা। আপনার এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং জীবনভর মেনে চলার একটি জীবন ভঙ্গিমা তৈরি করতে হবে।  বেশি বেশি পানি পান করুন। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। যারা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে পানি পান করতে পারেন তাতে খাওয়ার পরিমান কমে যাবে। খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বেশি পানি পান করবেন না, আধা ঘণ্টা পর বেশি পানি পান করুন। ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, জগিং ইত্যাদি বেশ কাজ দেয়। এগুলোর ব্যাপারে মনোযোগী হোন। তাই নিয়ন্ত্রিত খাবারের পাশাপাশি শরীর চর্চার জন্য একটি স্পেশাল রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। সেই রুটিনটা হতে পারে এ রকম—সোমবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, মঙ্গলবার :২০ মিনিট জগিং, বুধবার :৪০ মিনিট হাঁটা, বৃহস্পতিবার :২০ মিনিট জগিং, শুক্রবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, শনিবার :২০ মিনিট জগিং, রবিবার :বিশ্রাম। কি খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে মনে হচ্ছে! একটু তো কষ্ট করতেই হবে। কথায় আছে না, কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে! এই একটুখানি কষ্টের পর এখন ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়িয়ে দেখুন, ৩০ দিনে আপনার ওজন অন্তত ৫-৭ কেজি তো অবশ্যই কমেছে। সব কষ্ট ভুলে নিশ্চয়ই এখন আপনার মুখে হাসি ফুটেছে! ক র্ম জী বী না রী দে র জ ন্য সকাল ৬টা ৩০ মিনিট :১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট :১ স্লাইস ব্রাউন ব্রেড বা হোল গ্রেড ব্রেড, ডিমের সাদা অংশ ১টি, সালাদ অথবা সিদ্ধ সয়াবিন, সালাদ। সকাল ৯টা :৭০ গ্রাম চিকেন অথবা ১ পিস মাছ বা ১০০ গ্রাম টক দই সকাল ১১টা :১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট দুপুর ২টা : ২০০ গ্রাম ফল  ১/৪ গ্রাম সুইট কর্ন অথবা ১০০ গ্রাম টক দই  সালাদ বিকাল ৪টা : ১/২ টেবিল চামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি  ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা :( যেকোনো প্ল্যান বেছে নিতে পারেন)  ১/২ কাপ পপকর্ন (মাখন ছাড়া)  ১/২ কাপ সিদ্ধ সুইট কর্ন  ২ পিস স্টিমড ভেজ মোমো রাত ৯টা : ১টা সয়াবিন আটার রুটি (মেথি পাউডার মেশানো)  ২ বাটি সবজি, সালাদ  পিস মাছ বা চিকেন বা ৪ পিস টোফু রাত ৯টা ৩০ মিনিট :২০০ মিলি সয়া মিল্ক গৃ হি ণী দে র জ ন্য সকাল ৭টা : লেবুর রস এবং ১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত হার্বাল টি  ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সকাল ৯টা : মেথির পুর ভরা রুটি ১টি, ১ বাটি সবজি, সালাদ অথবা ১/৪ কাপ ওটমিল (জলে ফোটানো) সকাল ১১টা : ডিম পোচের সাদা অংশ অথবা ১/২ কাপ ছোলা সেদ্ধ, মুসম্বি বা কমলালেবু বা পেঁপে (১৫০ গ্রাম) দুপুর ১টা : ১টা ছোটকাপ ব্রাউন রাইস (৪০ গ্রাম)  ১/২ কাপ ডাল (১৫ গ্রাম)  ১ বাটি সবজি (আলু, মিষ্টি কুমড়া, বিট, কাঁচকলা ছাড়া যেকোনো সবজি)  মাছ (৭০ গ্রাম) বা সয়াবিন (৪০ গ্রাম) দুপুর ৩টা :৫০ গ্রাম টক দই বিকাল ৫টা :১ কাপ চা, ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা :১/২ কাপ ছোলা সিদ্ধ বা ৫০ গ্রাম দই এবং অর্ধেক আপেল রাত ৯টা : ১টি সয়া আটা রুটি, ২ কাপ সবজি, সালাদ  ৭০ গ্রাম মাছ বা ২০০ মিলি দুধ বা ৩ পিস টোফু।

এই শীতে উজ্জ্বল ও ঘন চুল পেতে জেনে নিন সহজ কিছু ম্যাজিক



সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো চুল। শীতকালে আমাদের ত্বকের পাশাপাশি এই চুলেরও দরকার হয় একটু বাড়তি মনোযোগ, একটু বাড়তি যত্ন। এই শীতে চুল পড়ে যাওয়া, রুক্ষ্ম ও খসখসে হয়ে যাওয়া, উজ্জলতা নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। ফলে এসব নিয়ে অনেকেরই থাকে অনেক দুশ্চিন্তা। জানেন কি,চুলের এইসব সমস্যা রোধ করতে পারবেন আপনি নিজেই আর তার জন্য প্রয়োজন শুধু একটুখানি যত্ন। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে কয়েকটি কাজ করলে আপনার চুল হয়ে উঠবে ঘন, কালো, উজ্জ্বল যাবে। দেখে নিন কি করলে এই শীতেও আপনার চুল থাকবে সব সময়ের মতোই স্বাস্থ্যোজ্জল।

১) ভালোভাবে চুল আঁচড়ান

ঘুমাতে যাবার আগে চুল আঁচড়ানোর অভ্যাসটা আপনার পরিবারের বয়স্ক নারীদের মাঝে লক্ষ্য করেছেন নিশ্চয়ই? তাদের এই কাজটির পেছনে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। চুল আঁচড়ানোর ফলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ভালো হয়। ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয়ে চুল পড়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, চুলের গোড়ায় উৎপন্ন হওয়া প্রাকৃতিক তেল পুরো চুলে ছড়িয়ে দেবার কাজটাও এভাবে হয়ে যায়।

২) এক গ্লাস দুধ, ১ চামচ মধু ও ১০ টি বাদাম

চুলকে সুস্থ ও সুন্দর থাকার প্রথম শর্ত হচ্ছে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগানো। রাতের বেলা এক গ্লাস দুধের সাথে ১ টেবিল চামচ মধু ও ১০ টি কাঠ বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রাচীন আয়ুর্বেদ মতে এই উপাদান গুলো আপনার চুল ও ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে আপনাকে করে তুলবে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

৩) ব্যবহার করুন কোমল বালিশের কভার

কি ভাবছেন? মনে করছেন বালিশের কভার তো নেহায়েতই তুচ্ছ একটা জিনিস। বড়জোর ঘরের শোভা বাড়ানোর কাজ করে সেটা। যেনতেন একটা বালিশের কভার ব্যবহার করলেই হয়ে যায়। মোটেই এমনটা ভাববেন না! যতক্ষণ ঘুমিয়ে আছেন ততক্ষণ এই বালিশের সংস্পর্শে থাকবে আপনার চুল। খসখসে বালিশের কভারের সাথে ঘষা খেয়ে আপনার চুল ফেটে বা রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। ঘুমানোর সময় ব্যবহার করুন সিল্ক বা সাটিনের কোমল কভার। এবং অবশ্যই পরিচ্ছন। কেননা নোংরা বালিশের কাভার বাড়িয়ে দেবে চুলে খুশকি ও উকুনের সমস্যা। দরকার হলে সেটা শুধুমাত্র ঘুমানোর সময়ের জন্য রাখুন। এর জন্য আপনার চুল যে কতটা উপকৃত হবে তা চিন্তাও করতে পারবেন না।

৪) ভেজা চুলে ঘুমাবেন না

ভেজা চুল বেঁধে রাখার অভ্যাস যাদের আছে তারা অতিসত্বর এই অভ্যাস ত্যাগ করুন। আর এই ভেজা চুল নিয়ে ঘুমাতে যাবার কথা তো চিন্তাও করবেন না। শুকনো চুলের চাইতে ভেজা চুল অনেকটা নাজুক হয়ে থাকে, কোনও রকমের অযত্ন সহ্য করতে পারে না। ভেজা চুল বেঁধে রাখতে গেলে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। আর এই ভেজা চুল নিয়ে যদি ঘুমাতে যান, তখন সেটা ঠিকমতো শুকাবে না, ভ্যাপসা হয়ে থাকবে এবং খুশকি আমদানি করবে। আর চুলে খুশকি হলে যে চুলের সমস্যা অনিবার্য তা নিশ্চয়ই আপনাকে বলে দিতে হবে না। ঘুমাবার আগে একটু সময় নিয়ে চুল শুকিয়ে ফেলুন।

৫) বাদাম তেলে হট অয়েল ম্যাসাজ করুন

মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ভালো করার জন্য আরেকটি ভালো উপায় হলো হট অয়েল ম্যাসাজ। শুধু তাই নয়। শীতকালে খুশকি বেশি হয়, সেটা কমিয়ে আনতেও অনেক কার্যকরী এই ম্যাসাজ। শীতের রাতে শুকনো চুলে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ভালোভাবে আঁচড়ে বেঁধে নিন। কোমল একটি বালিশের কভারে ঘুমিয়ে পড়ুন। সকালে উঠে শ্যাম্পু করে ফেলুন ভালো করে। দেখবেন খুশকির আক্রমন তো কমেছেই, সাথে চুল হয়ে উঠেছে মাখনের মত মোলায়েম ও উজ্জ্বল। এটা সপ্তাহে ২/৩বার করুন।

৬) চুল বেঁধে ঘুমান

অনেকেই চুল ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে যান। এতে কিন্তু চুলের কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরীরের নিচে চাপা পড়ে, ঘষা লেগে চুল ফেটে যায় এবং এর ফলাফলস্বরূপ চুল পড়ে যেতে শুরু করে। ঘুমাতে যাবার আগে চুল আঁচড়ে তাকে ঝুঁটি করে বা বেণী করে ফেলুন। এতে চুল থাকবে সুরক্ষিত। চুল ফাটা এবং চুল পড়ার পরিমাণ কমে যাবে অনেকটাই। আর চুলের সৌন্দর্য যে বজায় থাকবে তা তো বলার অপেক্ষা রাখেই না। তাছাড়া রাত ভর বালিশে চাদরে ঘষা খেয়ে সকালে চুল হয়ে ওঠে প্রাণহীন আর শুষ্ক। বেঁধে ঘুমালে সে সমস্যাও দূর হবে।

Friday, July 4, 2014

শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা রাখা খুব দরকারি




যখন স্কুলে পড়তাম, বাধ্যতামূলক ছিল ড্রিল করা। খেলাধুলা করা। ফুটবল ক্রিকেট। ছিল খেলার মাঠ। মনে আছে শৈলেন স্যারের কথা, আমাদের ড্রিল করাতেন। স্কাউট টিচার ছিলেন আবার বিজ্ঞানও পড়াতেন।

সেসব দিন কোথায়? এখন ছাত্রছাত্রীদের ঘাড়ে বড় বড় বইয়ের ভারী বোঝা। এত পড়া, কিন্তু কী শেখা হয়? কী শেখে তারা? বিদ্যা কেবল জোরে ঢুকিয়ে দেওয়া, কাজ হয় না তেমন। যা হচ্ছে, তা হলো, স্থূল হচ্ছে ছেলেমেয়েরা। খেলাধুলা নেই, কেবলই বসে থাকা, ফাস্টফুড কোমলপানীয় খাওয়া। এসব সমস্যা এককালে ছিল শিল্পোন্নত দেশগুলোয়। এখন হালে সে হাওয়া লেগেছে আমাদের মতো দেশেও। মন্দ বিদ্যা শেখা আমাদের কেন আসে, ফাস্টফুড খাওয়া আর ব্যায়াম না করা কেন ভালো লাগে! তাই স্থূল হচ্ছে টিনএজরা।

পশ্চিমা গবেষকেরা বলছেন, টিনএজরা যদি স্কুলে হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে যায়, হাইস্কুল স্পোর্টস টিমের একটি খেলায়ও যদি অংশ নেয়, একাধিক হলে বেশ ভালো, তা হলে বেশি ওজন বা স্থূল হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যাবে। তাই তো ছিল। কী কুক্ষণে যে বদলে গেল সব!
গত দশকে শিশুদের মধ্যে স্থূলতা ছড়িয়ে পড়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ওই সব দেশে তরুণ যুবকদের মধ্যে শরীরচর্চাকে প্রসারিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল জোরেশোরে। নতুন এই গবেষণা প্রথম প্রদর্শন করল যে স্কুলভিত্তিক ব্যায়াম ওজন বাড়াকে বেশ হ্রাস করে বটে, তবে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ সক্রিয়ভাবে করলে ফলাফল আরও ভালো হয়। শরীরচর্চার ক্লাস করে সব শিক্ষার্থী সমভাবে ব্যায়ামের মধ্যে আসে না। তবে প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলায় অংশগ্রহণে হিতকর ফল আসে বেশি। অভিজাত আবাসিক এলাকায় দোতলা তিনতলা ভাগ করে বা সীমিত পরিসরে খেলার মাঠবিহীন স্কুলঘর করে বিদ্যাশিক্ষা কী হয় জানি না। এতে শরীর দুর্বল, রুগ্ণ স্বাস্থ্য, ভগ্নদেহ হয় তরুণ শিক্ষার্থীদের। তবে ব্যবসা করলেন অনেকে, তা তো বটে।
ডার্টমাউথ গিনেস স্কুল অব মেডিসিনের হুড সেন্টার ফর চিলড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলিসের গবেষক কিথ এম ড্রেকস বলেন, স্পোর্টস টিম বা সংস্থার অংশ হলে বাচ্চারা অবিরাম কোনো না কোনো মাঝারি বা কঠোর খেলার অনুশীলন বা খেলার মধ্যে থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, স্কুলে শরীরচর্চা শিক্ষা কঠোর নয়, অনেকে এসব ক্লাস এড়িয়ে যায়, অনেক সময় শরীরচর্চা তেমন কঠোরও নয়।

বিখ্যাত জার্নাল পেডিয়াট্রিকস- প্রকাশিত নিবন্ধে ড্রেকস সহকর্মীরা দেখিয়েছেন, খেলাধুলায় বেশি বেশি অংশগ্রহণ করলে, বাসে বা গাড়িতে চড়ে স্কুলে যাওয়া কমালে এর প্রভাব পড়ে শৈশব স্থূলতার ওপর। যদি সব টিনএজার প্রতিবছর অন্তত দুটো স্পোর্টস টিমে খেলে, প্রতি মৌসুমে অন্তত একটি টিমে অংশ নেয়, তা হলে স্থূলতার হার কমে ২৬ শতাংশ এবং বেশি ওজনের টিনএজদের হার কমে ১১ শতাংশ। আর সব টিনএজার যদি সপ্তাহে অন্তত চার দিন হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যায়, তা হলে স্থূল টিনএজদের সংখ্যা কমে ২২ শতাংশ।
অবশ্য আমেরিকাতে এক-তৃতীয়াংশ হাইস্কুল শিক্ষার্থী বেশি ওজনের বা স্থূল। সে জন্য সেখানে টিনএজদের যেকোনো রকম শরীরচর্চাকে উৎসাহিত উজ্জীবিত করার তোড়জোড় চলছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, স্কুলে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এক ঘণ্টা মাঝারি বা কঠোর শরীরচর্চা যেন করে। কিন্তু তা অনেকেই করে না।সেফ রুট টু স্কুলনামের ১০০ কোটি ডলারের প্রোগ্রাম নেওয়া হলো বেশি বেশি সাইডওয়ার্ক, বাইক পথ পথচারীবান্ধব পথ তৈরির জন্য।
আমাদের দেশে স্থূল শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সংখ্যা জানা নেই, তবে বাড়ছে। এই প্রজন্ম কম বয়সেই নানা ক্রনিক রোগের শিকার হবে। তাই সে রকম চিন্তাভাবনা আমরাও যদি করি, ভালো হয় না? দেখা যায়, হেঁটে বা বাইকে চড়ে স্কুলে গেলে স্থূলতা অনেক কমে।
টিনএজদের ব্যায়াম খেলাধুলায় উৎসাহী করতে হবে। মা-বাবা নিজেরা যদি খেলাধুলা করেন, ব্যায়াম করেন, স্কুলে যদি শিক্ষকেরা উৎসাহী করেন, খেলা স্ট্রেটস স্কুলে যদি হয়, তা হলে কাজ হবে। সবাই যে ফুটবল বা বাস্কেটবল খেলবে তা নয়, কেউ খেলবে ক্রিকেট, কেউ নৃত্য করবে, কেউ জিমন্যাস্টিকস করবেখেলাধুলা হলেই হলো।



আধকপালি মাথাব্যথা



মাথাধরা। আধকপালি। মিগ্রেন বলে জানি আমরা।

কী সেসব কারণ? মিগ্রেনের ঘোড়া টিপে যেসব তর্জনী, এদের চেনা চাই।
 
এমন মাথাধরার কারণ হতে পারে অফিসের বসও, যা কিছু স্ট্রেসকে উসকে দেয়।
 
তাই মানুষকে টেনশন-প্রবণ করে তোলে। রাগী বস হতে পারে টেনশনের কারণ।
এর কারণ স্পষ্ট নয়, কেমন করে তা ঘটে তাও স্পষ্ট নয়। মগজে স্নায়ুপথের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়? যেসব স্নায়ুপথ বেদনাবহন করে, এরা কি হয়ে পড়ে বেশি স্পর্শকাতর? মগজের মধ্যে পরিবর্তন এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত?
 
উষ্ণ আবহাওয়া। তাপমাত্রা যখন বাড়তে থাকে, তখন মিগ্রেন হওয়া বা প্রচণ্ডl মাথাধরা হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় গবেষকেরা দেখেছেন, প্রতি ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ, মানে শতাংশ বৃদ্ধি হয় মিগ্রেনের ঝুঁকি। বৃষ্টির আগে আগে, পারদমান চাপ নেমে যাওয়া, মিগ্রেন নয় এমন মাথাধরা বাড়তে পারে।
কড়া সুগন্ধি। কড়া গন্ধ, এমনকি সুগন্ধঅনেকের ক্ষেত্রে মিগ্রেন উসকে দেয়। কেন তা ঘটে তা বেশ অস্পষ্ট, মনে হয় সেই সুবাস উদ্দীপ্ত করে স্নায়ুতন্ত্র। দায়ী সব গন্ধ, সুগন্ধি হলো পেইন্ট, পারফিউম, কিছু কিছু পুষ্প।
 
কেশবন্ধনী ইত্যাদি। কী করে চুল বাঁধেন তা- কিন্তু মাথাধরার সঙ্গেl সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। আঁটসাঁট পনিটেইল করোটির সংযোজনকলা টানটান করে দেয়: মাথা ধরে কখনো। হেডব্যান্ড, বিনুনি, খোঁপা, আঁটসাঁট হ্যাটমাথাধরা ঘটাতে পারে।

 ব্যায়াম, শরীরচর্চা। খুব উদ্যমী ব্যায়াম ঘটাতে পারে মাথাধরা। জগারস হেডেকl হতে পারে। হতে পারে সেক্স হেডেকও।

 ত্রুটিপূর্ণ দেহভঙ্গি। খুব কঠোর শ্রম করে ঘেমে-নেয়ে উঠে মাথা ধরাতে হবে,l তা নয়। কদাকার চলনভঙ্গি, ডেস্কে বসে মাথা-কাঁধ নুয়ে বসাএসব মাথা ধরাতে পারে। দেহভঙ্গির ত্রুটি কত রকমই হতে পারেকাঁধ ঝুঁকে থাকা, খুব নিচু বা খুব উঁচু মনিটরে অনেকক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা, কান কাঁধের মাঝখানে ফোন রেখে অনেকক্ষণ কথা বলা, টেনশন হেডেক বারবার হলে কর্মস্থলে দেহভঙ্গি, উপবেশন সব নজর করতে হবে।

 পনির: অনেকের মিগ্রেন হয় পুরোনো পনির খেলে, যেমন ব্লুচিজ, সেডার, সুইস।  হয়তো এর অন্তর্গত টাইরামিনের জন্য। পনির যত পুরোনো, টাইরামিন হয় তত বেশি।

 রেডওয়াইন: রেডওয়াইন অন্যান্য অ্যালকোহল পানীয়তে আছে টাইরামিন। মদের  অন্যান্য উপকরণও মিগ্রেন ঘটাতে পারে। মদপান মগজে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়, ফলাফল হতে পারে তীব্র।


 প্রক্রিয়াজাত মাংস: এতে থাকতে পারে টাইরামিন। ছাড়া ফুড এডিটিভl নাইট্রাইট: ঘটাতে পারে মাথাধরা।
তবে ফুড এডিটিভ মাথা ধরায় দুদিকেই, ঠিক মিগ্রেন নয়। মিগ্রেন আধকপালি: একসঙ্গে মাথার একপাশে হয় ব্যথা।

 কোনো বেলা আহার বাদ দেওয়া: Skipping Meals একটি বদভ্যাস। ক্ষুধার কারণেl মাথাধরা অনেক সময় স্পষ্ট হয় না। কোনো বেলা আহার না করলে ক্ষুধা বোধ হওয়ার আগেই মাথার একদিক ধরে যায়। সমস্যা হলো রক্তের সুগারমান যায় নেমে। তবে ক্ষুধার মাথাধরা উপশমের জন্য চকলেটবার বা মিষ্টি-মণ্ডা খাওয়া ঠিক নয়, এতে রক্তের সুগার প্রথমে খুব তুঙ্গে উঠে পরে ধপাস নেমে যেতে পারে অনেকটা।
ধূমপান: ধূমপান মাথাধরার একটি বড় কারণ। যিনি ধূমপান করছেন, তিনিই শুধু নন, পাশের যে লোক সে ধূমপায়ীর ছেড়ে দেওয়া ধূম সেবন করছে, যাতে রয়েছে নিকোটিন: মগজের রক্তনালি হয় সরু, মাথা ধরে সহসা তারও। যাদের ক্লাস্টার হেডেক হয়, তারা ধূমপান ছেড়ে দিলে বা অন্যের সিগারেটের ধোঁয়া সেবন এড়ালে বেশ লাভ হয়। আধকপালি প্রচণ্ড ব্যথা হয়, চোখ নাকের ওপরও প্রভাব পড়ে।
 
ক্যাফিন: যাদের মাথাধরা বাই রয়েছে, তাদের জন্য ক্যাফিন ব্যবহারে সতর্কতা।l মাঝারি কফি পান ঠিক, তবে বেশ কয়েক কাপ কফি মাথা ধরার জন্য যথেষ্ট। চা-কফিতে আসক্ত যাঁরা হন, তাঁরা ছেড়ে দিলেও হঠাৎ তাঁদের মাথা ধরে বেশ।

শনাক্ত করতে হবে ট্রিগারগুলো
কী সব জিনিস মিগ্রেন ঘটায়, তা জানা গেলে মাথা ধরা শুরু হওয়ার আগে একে রোধ করা সম্ভব হতে পারে। রাখা যেতে পারেহেডেক ডায়েরি প্রতিদিন কী কী খাবার খাই, চাপের ঘটনা কী কী ঘটল, আবহাওয়ার পরিবর্তন, শরীরচর্চা সব। কখন মাথা ধরা শুরু হয়, ঠিক কটায় ধরে কটায় ছেড়ে যায়, তাহলে একে এড়ানো সম্ভব হবে নানা কৌশলে।

মাথাধরা সমাধান: স্ট্রেস মোকাবিলা
অনেকে মিগ্রেন টেনশন হেডেককে চাপ মোকাবিলার কৌশল প্রয়োগ করে সামাল দেন। জীবনে চাপ সম্পূর্ণ এড়ানো যায় না, তবে এর মুখোমুখি হলে সামাল দেওয়ার কৌশল জানা যায়। ধ্যানচর্চা ম্যাসাজ অনেক সময় কার্যকর হতে পারে।

পা দুটো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নিন
মাঝারি ব্যায়াম চাপ কমানোর বড় কৌশল। হাঁটা বড় ভালো ব্যায়াম। টেনশন হেডেক রোধে বেশ ফলপ্রসূ। হাঁটার সময় হাত দুটো দুলুনি ঘাড় কাঁধের পেশি রিলাক্স করে।

নিয়মিত আহার
নিয়মিত আহার করলে, দিনজুড়ে সুষম খাবার রক্তের সুগারও রাখে সুমিত। ক্ষুধার কারণে মাথা ধরবে না তাহলে। প্রোটিন জটিল শ্বেতসারের সমন্বয়ে খাবার চিকেনের ঝোল ভাত বা মাছ-ভাত, সবজি, দধি, প্রচুর জলপান। পানিশূন্যতায় মাথা ধরে।

ফিজিক্যাল থেরাপি
মানে ব্যায়াম এবং ব্যথা কমানো নড়ন-চড়নের পরিধি বাড়ানো। ঘাড়ের পেশির ব্যায়াম দেহভঙ্গি সব চর্চা।
ওষুধ: ব্যথার ওষুধ খাবেন সতর্কতার সঙ্গে, চিকিৎসকের পরামর্শে।

কখন চিকিৎসক: গুরুতর মাথাধরা দুদিনের বেশি চলছে। দেখতে সমস্যা, চলনে সমস্যা, বিহ্বলতা, খিঁচুনি-জ্বর, নিশ্চল ঘাড়চিকিৎসক দেখানো চাই


Afrooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooz

Drug Index

Social Icons

 
Blogger Templates