ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য আপনার চেষ্টার কমতি নেই। ডায়েট, এক্সারসাইজ কোনো কিছুই মানতে অসুবিধা নেই। তবু ঠিক যতটা চাইছেন ততটা রোগা হতে পারছেন না। ওজন কমাতে এমনই অনেক বিচিত্র সমস্যায় পড়তে হয়। তাই এবার আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা সাহায্য করতে কিছু পরামর্শ নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার বাইরের খাবার বলতে গেলে খাই না, তবুও ওজন বেড়ে যাচ্ছে বা নিয়ম করে জিমে যাই, তাও রোগা হতে পারছি না—এই ধরনের আক্ষেপ কি প্রায়ই বন্ধুবান্ধব বা চেনা পরিচিতদের মুখে শোনেন? আর ভাবেন আপনারও একই অবস্থা। আসলে আমরা প্রত্যেকে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে চাই, আর তার প্রথম শর্ত হচ্ছে নির্মেদ ঝরঝরে চেহারা। তার জন্য স্ট্রিক্ট ডায়েট, নিয়ম মেনে এক্সাইসাইজ কোনো কিছু করতেই আমরা পিছপা হই না। এক্সারসাইজ শুধুমাত্র ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে না, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি মেটাবলিজম ভালো করে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে। তবে ওজন কমানোর জন্য নিজের ইচ্ছেমতো এক্সাইসাইজ বা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। জানতে হবে সঠিক প্রক্রিয়া। নিজের শরীরের গঠন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে হবে সঠিক প্ল্যান। জীবনযাত্রায় রদবদল দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস বদলিয়ে বাড়তি ওজনের ওপর বড় প্রভাব ফেলা যায়। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন কথা শুনলেই মনে হয় সামনে পাহাড় সমান কাজ। আমরা অনেকেই মনে করি অতিরিক্ত নিয়মকানুন মেনে চললে জীবন ঠিকভাবে উপভোগ করা যায় না। বাস্তবে কিন্তু সবটাই অভ্যাসের ব্যাপার। ওজন কমানোর মানেই যে হাই ক্যালরি খাবার জীবন থেকে বাদ দিতে হবে বা এক্সারসাইজ করতে করতে সমস্ত সময় কাটিয়ে ফেলতে হবে তার কোনো মানে নেই। তবে ঝরঝরে থাকতে হলে আপনাকে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবার খান নতুন করে খাদ্যাভাস শুরু করুন, যাতে কিনা আপনার খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্যালরি কমাতে আপনার খাদ্যের রুচি, তৃপ্তি ও খাদ্য তৈরি সহজ পদ্ধতি কোনোটিই যেন বাদ না যায়। সবচেয়ে ভালো পথ হলো, আপনি বেশি বেশি করে উদ্ভিজ খাদ্য যেমন ফল, সবজি এবং আঁশ জাতীয় খাদ্য খান। সব সময় সচেষ্টা থাকুন যেন আপনার খাদ্য বৈচিত্র্যময় হয় এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে। কিছু এক্সারসাইজ নিজেকে সারাদিন ফিট, চনমনে রাখতে আর শরীরের কলকব্জাগুলোকে পরিপূর্ণভাবে সজাগ রাখতেই এক্সারসাইজ করতে হয়। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন কমাতে এক্সারসাইজ অপরিহার্য। আপনার শরীর যে ধরনের এক্সারসাইজ বহন করতে পারে বা তার সহ্য ক্ষমতা যে ধরনের এক্সারসাইজকে ধারণ করতে পারে সে রকম এক্সারসাইজই বেছে নিন, তবে এ সবকিছু করার জন্য আপনাকে মানতে হবে সহজ কিছু নিয়ম। নিয়ম ১ : ওয়ার্মআপ করার জন্য বাড়ির ছাদে বা সামনের রাস্তা থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসুন। যদি বাড়িতে ট্রেডমিল থাকে তাহলে ১০ মিনিট ট্রেডমিলে দৌড়াতে পারেন। একেবারেই জায়গা নেই এমন হলে আপনি আপনার রুমেই স্বাচ্ছন্দ্যে দৌড়াতে পারেন। নিয়ম ২ : এরপর পালা শুরু হবে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজের, অর্থাত্ এক্সারসাইজের মাধ্যমে পিঠ, ঘাড়, হাত এবং পা ভালোভাবে স্ট্রেচ করা দরকার। নিয়ম ৩ : এবার করুন কার্ডিওয়ার্ক আউট। একটু জোরে হেঁটে আসুন, আস্তে আস্তে গতি বাড়ান এরপর ১৫ মিনিট জগিং করতে পারেন। পুরো ৩৫ মিনিট কার্ডিওয়ার্ক করলে আপনার শরীরের জন্য যথার্থ উপকার পাবেন। নিয়ম ৪ :নিজেকে কোল্ডডাউন করতে ৫ মিনিট একদম আস্তে আস্তে হাঁটুন এখন ৫ মিনিট স্ট্রেচ করতে পারেন। কিছু সহজ এক্সারসাইজ বাড়িতে ট্রাই করতে পারেন। নিয়ম ৫ :সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত সোজা করে ঘরের সিলিংয়ের দিকে স্ট্রেচ করুন। এবার পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে যতটা সম্ভব জোরে লাফান। মাটিতে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার লাফান কোনো ব্রেক দিবেন না। টানা এক মিনিট লাফাতে থাকুন। এক মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার শুরু করুন। দশ-বারোবার এইভাবে লাফাতে পারেন। নিয়ম ৬ : মাটির উপর শুয়ে পড়ুন তারপর দুটি হাতের সাহায্যে মাটি থেকে উঠার চেষ্টা করুন। হাতে কোনো ভাঁজ যাতে না পড়ে। শুরুতে মোটামুটি ৫-১০টি পুশআপ দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় এক হাতের উপর ভর দিয়েও পুশআপ করা যায়। ওজন কমাতে শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হলো ক্যালরি পুড়ানো, কতটুকু ক্যালরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবচেয়ে ভালো সহজ উপায় হলো—প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা। আর ছোটখাটো সহজ উপায় হলো আপনার শারীরিক তত্পরতা আপনি বাড়ানো, যেমন লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন, গাড়িটা বাদ রেখে আশপাশের বাজারঘাট, অফিস হেঁটেই যান। তবে শুধু হাঁটলেই হবে না, জগিং বা সাঁতারও কাটতে হবে। এতে আপনার ক্যালরি বার্ন হবে বেশি। নিচে কী করলে কতটা ক্যালরি বার্ন হবে তার একটা চার্ট দেখানো হলো— এক্সারসাইজ ক্যালরি বার্ন হাঁটা :৭৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি জগিং :৮৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি বাইসাইকেলিং বা সাঁতার কাটা :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট এরোবিক এক্সারসাইজ গানের তালে তালে :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট দৌড়ানো :৩৫৫ ক্যালরি/ ৩০ মিনিট এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম উঁচু ভবনে উঠার সময় লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। রিকশার পরিবর্তে পায়ে হাঁটার অভ্যাস করুন। নিয়মিত প্রতি মিনিটে ১১০ কদম হাঁটার অভ্যাস করুন ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত কমপক্ষে। নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস করুন, যেমন কাপড় ধোয়া। আপনার খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করুন। অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবারের পরিবর্তে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। যেমন ফলমূল, শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে। খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখবেন না। (টেলিভিশন দেখতে দেখতে খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে) ফাস্টফুডের পরিবর্তে বাসায় তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন। রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চিরস্থায়ী ওজন কমাতে দরকার সময় এবং চেষ্টা। আপনার এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং জীবনভর মেনে চলার একটি জীবন ভঙ্গিমা তৈরি করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করুন। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। যারা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে পানি পান করতে পারেন তাতে খাওয়ার পরিমান কমে যাবে। খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বেশি পানি পান করবেন না, আধা ঘণ্টা পর বেশি পানি পান করুন। ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, জগিং ইত্যাদি বেশ কাজ দেয়। এগুলোর ব্যাপারে মনোযোগী হোন। তাই নিয়ন্ত্রিত খাবারের পাশাপাশি শরীর চর্চার জন্য একটি স্পেশাল রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। সেই রুটিনটা হতে পারে এ রকম—সোমবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, মঙ্গলবার :২০ মিনিট জগিং, বুধবার :৪০ মিনিট হাঁটা, বৃহস্পতিবার :২০ মিনিট জগিং, শুক্রবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, শনিবার :২০ মিনিট জগিং, রবিবার :বিশ্রাম। কি খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে মনে হচ্ছে! একটু তো কষ্ট করতেই হবে। কথায় আছে না, কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে! এই একটুখানি কষ্টের পর এখন ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়িয়ে দেখুন, ৩০ দিনে আপনার ওজন অন্তত ৫-৭ কেজি তো অবশ্যই কমেছে। সব কষ্ট ভুলে নিশ্চয়ই এখন আপনার মুখে হাসি ফুটেছে! ক র্ম জী বী না রী দে র জ ন্য সকাল ৬টা ৩০ মিনিট :১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট :১ স্লাইস ব্রাউন ব্রেড বা হোল গ্রেড ব্রেড, ডিমের সাদা অংশ ১টি, সালাদ অথবা সিদ্ধ সয়াবিন, সালাদ। সকাল ৯টা :৭০ গ্রাম চিকেন অথবা ১ পিস মাছ বা ১০০ গ্রাম টক দই সকাল ১১টা :১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট দুপুর ২টা : ২০০ গ্রাম ফল ১/৪ গ্রাম সুইট কর্ন অথবা ১০০ গ্রাম টক দই সালাদ বিকাল ৪টা : ১/২ টেবিল চামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা যেকোনো প্ল্যান বেছে নিতে পারেন) ১/২ কাপ পপকর্ন (মাখন ছাড়া) ১/২ কাপ সিদ্ধ সুইট কর্ন ২ পিস স্টিমড ভেজ মোমো রাত ৯টা : ১টা সয়াবিন আটার রুটি (মেথি পাউডার মেশানো) ২ বাটি সবজি, সালাদ পিস মাছ বা চিকেন বা ৪ পিস টোফু রাত ৯টা ৩০ মিনিট :২০০ মিলি সয়া মিল্ক গৃ হি ণী দে র জ ন্য সকাল ৭টা : লেবুর রস এবং ১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত হার্বাল টি ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সকাল ৯টা : মেথির পুর ভরা রুটি ১টি, ১ বাটি সবজি, সালাদ অথবা ১/৪ কাপ ওটমিল (জলে ফোটানো) সকাল ১১টা : ডিম পোচের সাদা অংশ অথবা ১/২ কাপ ছোলা সেদ্ধ, মুসম্বি বা কমলালেবু বা পেঁপে (১৫০ গ্রাম) দুপুর ১টা : ১টা ছোটকাপ ব্রাউন রাইস (৪০ গ্রাম) ১/২ কাপ ডাল (১৫ গ্রাম) ১ বাটি সবজি (আলু, মিষ্টি কুমড়া, বিট, কাঁচকলা ছাড়া যেকোনো সবজি) মাছ (৭০ গ্রাম) বা সয়াবিন (৪০ গ্রাম) দুপুর ৩টা :৫০ গ্রাম টক দই বিকাল ৫টা :১ কাপ চা, ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা :১/২ কাপ ছোলা সিদ্ধ বা ৫০ গ্রাম দই এবং অর্ধেক আপেল রাত ৯টা : ১টি সয়া আটা রুটি, ২ কাপ সবজি, সালাদ ৭০ গ্রাম মাছ বা ২০০ মিলি দুধ বা ৩ পিস টোফু।
Thursday, July 24, 2014
ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য কার্যকর কিছু পদ্ধতি
ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য আপনার চেষ্টার কমতি নেই। ডায়েট, এক্সারসাইজ কোনো কিছুই মানতে অসুবিধা নেই। তবু ঠিক যতটা চাইছেন ততটা রোগা হতে পারছেন না। ওজন কমাতে এমনই অনেক বিচিত্র সমস্যায় পড়তে হয়। তাই এবার আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়ায় কিছুটা সাহায্য করতে কিছু পরামর্শ নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার বাইরের খাবার বলতে গেলে খাই না, তবুও ওজন বেড়ে যাচ্ছে বা নিয়ম করে জিমে যাই, তাও রোগা হতে পারছি না—এই ধরনের আক্ষেপ কি প্রায়ই বন্ধুবান্ধব বা চেনা পরিচিতদের মুখে শোনেন? আর ভাবেন আপনারও একই অবস্থা। আসলে আমরা প্রত্যেকে সুস্থ ও সুন্দর থাকতে চাই, আর তার প্রথম শর্ত হচ্ছে নির্মেদ ঝরঝরে চেহারা। তার জন্য স্ট্রিক্ট ডায়েট, নিয়ম মেনে এক্সাইসাইজ কোনো কিছু করতেই আমরা পিছপা হই না। এক্সারসাইজ শুধুমাত্র ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতে সাহায্য করে না, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে সুস্থ থাকতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি মেটাবলিজম ভালো করে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে। তবে ওজন কমানোর জন্য নিজের ইচ্ছেমতো এক্সাইসাইজ বা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। জানতে হবে সঠিক প্রক্রিয়া। নিজের শরীরের গঠন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিতে হবে সঠিক প্ল্যান। জীবনযাত্রায় রদবদল দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস বদলিয়ে বাড়তি ওজনের ওপর বড় প্রভাব ফেলা যায়। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন কথা শুনলেই মনে হয় সামনে পাহাড় সমান কাজ। আমরা অনেকেই মনে করি অতিরিক্ত নিয়মকানুন মেনে চললে জীবন ঠিকভাবে উপভোগ করা যায় না। বাস্তবে কিন্তু সবটাই অভ্যাসের ব্যাপার। ওজন কমানোর মানেই যে হাই ক্যালরি খাবার জীবন থেকে বাদ দিতে হবে বা এক্সারসাইজ করতে করতে সমস্ত সময় কাটিয়ে ফেলতে হবে তার কোনো মানে নেই। তবে ঝরঝরে থাকতে হলে আপনাকে অ্যাক্টিভ থাকতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই। পুষ্টিকর খাবার খান নতুন করে খাদ্যাভাস শুরু করুন, যাতে কিনা আপনার খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্যালরি কমাতে আপনার খাদ্যের রুচি, তৃপ্তি ও খাদ্য তৈরি সহজ পদ্ধতি কোনোটিই যেন বাদ না যায়। সবচেয়ে ভালো পথ হলো, আপনি বেশি বেশি করে উদ্ভিজ খাদ্য যেমন ফল, সবজি এবং আঁশ জাতীয় খাদ্য খান। সব সময় সচেষ্টা থাকুন যেন আপনার খাদ্য বৈচিত্র্যময় হয় এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে। কিছু এক্সারসাইজ নিজেকে সারাদিন ফিট, চনমনে রাখতে আর শরীরের কলকব্জাগুলোকে পরিপূর্ণভাবে সজাগ রাখতেই এক্সারসাইজ করতে হয়। অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে কিংবা ওজন কমাতে এক্সারসাইজ অপরিহার্য। আপনার শরীর যে ধরনের এক্সারসাইজ বহন করতে পারে বা তার সহ্য ক্ষমতা যে ধরনের এক্সারসাইজকে ধারণ করতে পারে সে রকম এক্সারসাইজই বেছে নিন, তবে এ সবকিছু করার জন্য আপনাকে মানতে হবে সহজ কিছু নিয়ম। নিয়ম ১ : ওয়ার্মআপ করার জন্য বাড়ির ছাদে বা সামনের রাস্তা থেকে ২০ মিনিট হেঁটে আসুন। যদি বাড়িতে ট্রেডমিল থাকে তাহলে ১০ মিনিট ট্রেডমিলে দৌড়াতে পারেন। একেবারেই জায়গা নেই এমন হলে আপনি আপনার রুমেই স্বাচ্ছন্দ্যে দৌড়াতে পারেন। নিয়ম ২ : এরপর পালা শুরু হবে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজের, অর্থাত্ এক্সারসাইজের মাধ্যমে পিঠ, ঘাড়, হাত এবং পা ভালোভাবে স্ট্রেচ করা দরকার। নিয়ম ৩ : এবার করুন কার্ডিওয়ার্ক আউট। একটু জোরে হেঁটে আসুন, আস্তে আস্তে গতি বাড়ান এরপর ১৫ মিনিট জগিং করতে পারেন। পুরো ৩৫ মিনিট কার্ডিওয়ার্ক করলে আপনার শরীরের জন্য যথার্থ উপকার পাবেন। নিয়ম ৪ :নিজেকে কোল্ডডাউন করতে ৫ মিনিট একদম আস্তে আস্তে হাঁটুন এখন ৫ মিনিট স্ট্রেচ করতে পারেন। কিছু সহজ এক্সারসাইজ বাড়িতে ট্রাই করতে পারেন। নিয়ম ৫ :সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত সোজা করে ঘরের সিলিংয়ের দিকে স্ট্রেচ করুন। এবার পায়ের আঙ্গুলের উপর ভর দিয়ে যতটা সম্ভব জোরে লাফান। মাটিতে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার লাফান কোনো ব্রেক দিবেন না। টানা এক মিনিট লাফাতে থাকুন। এক মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার শুরু করুন। দশ-বারোবার এইভাবে লাফাতে পারেন। নিয়ম ৬ : মাটির উপর শুয়ে পড়ুন তারপর দুটি হাতের সাহায্যে মাটি থেকে উঠার চেষ্টা করুন। হাতে কোনো ভাঁজ যাতে না পড়ে। শুরুতে মোটামুটি ৫-১০টি পুশআপ দিতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় এক হাতের উপর ভর দিয়েও পুশআপ করা যায়। ওজন কমাতে শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হলো ক্যালরি পুড়ানো, কতটুকু ক্যালরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবচেয়ে ভালো সহজ উপায় হলো—প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা। আর ছোটখাটো সহজ উপায় হলো আপনার শারীরিক তত্পরতা আপনি বাড়ানো, যেমন লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন, গাড়িটা বাদ রেখে আশপাশের বাজারঘাট, অফিস হেঁটেই যান। তবে শুধু হাঁটলেই হবে না, জগিং বা সাঁতারও কাটতে হবে। এতে আপনার ক্যালরি বার্ন হবে বেশি। নিচে কী করলে কতটা ক্যালরি বার্ন হবে তার একটা চার্ট দেখানো হলো— এক্সারসাইজ ক্যালরি বার্ন হাঁটা :৭৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি জগিং :৮৫ ক্যালরি/ প্রতি ১ কি.মি বাইসাইকেলিং বা সাঁতার কাটা :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট এরোবিক এক্সারসাইজ গানের তালে তালে :৭৫ ক্যালরি/ ২০ মিনিট দৌড়ানো :৩৫৫ ক্যালরি/ ৩০ মিনিট এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম উঁচু ভবনে উঠার সময় লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। রিকশার পরিবর্তে পায়ে হাঁটার অভ্যাস করুন। নিয়মিত প্রতি মিনিটে ১১০ কদম হাঁটার অভ্যাস করুন ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত কমপক্ষে। নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস করুন, যেমন কাপড় ধোয়া। আপনার খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করুন। অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবারের পরিবর্তে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। যেমন ফলমূল, শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে। খাওয়ার সময় টেলিভিশন দেখবেন না। (টেলিভিশন দেখতে দেখতে খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে) ফাস্টফুডের পরিবর্তে বাসায় তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন। রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চিরস্থায়ী ওজন কমাতে দরকার সময় এবং চেষ্টা। আপনার এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং জীবনভর মেনে চলার একটি জীবন ভঙ্গিমা তৈরি করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করুন। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। যারা কম খেতে চান তারা খাবারের আগে পানি পান করতে পারেন তাতে খাওয়ার পরিমান কমে যাবে। খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বেশি পানি পান করবেন না, আধা ঘণ্টা পর বেশি পানি পান করুন। ব্যালেন্স ডায়েটের পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, জগিং ইত্যাদি বেশ কাজ দেয়। এগুলোর ব্যাপারে মনোযোগী হোন। তাই নিয়ন্ত্রিত খাবারের পাশাপাশি শরীর চর্চার জন্য একটি স্পেশাল রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। সেই রুটিনটা হতে পারে এ রকম—সোমবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, মঙ্গলবার :২০ মিনিট জগিং, বুধবার :৪০ মিনিট হাঁটা, বৃহস্পতিবার :২০ মিনিট জগিং, শুক্রবার :৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, শনিবার :২০ মিনিট জগিং, রবিবার :বিশ্রাম। কি খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে মনে হচ্ছে! একটু তো কষ্ট করতেই হবে। কথায় আছে না, কষ্ট করলেই কেষ্ট মেলে! এই একটুখানি কষ্টের পর এখন ওজন মাপার মেশিনে দাঁড়িয়ে দেখুন, ৩০ দিনে আপনার ওজন অন্তত ৫-৭ কেজি তো অবশ্যই কমেছে। সব কষ্ট ভুলে নিশ্চয়ই এখন আপনার মুখে হাসি ফুটেছে! ক র্ম জী বী না রী দে র জ ন্য সকাল ৬টা ৩০ মিনিট :১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি। সকাল ৭টা ৩০ মিনিট :১ স্লাইস ব্রাউন ব্রেড বা হোল গ্রেড ব্রেড, ডিমের সাদা অংশ ১টি, সালাদ অথবা সিদ্ধ সয়াবিন, সালাদ। সকাল ৯টা :৭০ গ্রাম চিকেন অথবা ১ পিস মাছ বা ১০০ গ্রাম টক দই সকাল ১১টা :১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট দুপুর ২টা : ২০০ গ্রাম ফল ১/৪ গ্রাম সুইট কর্ন অথবা ১০০ গ্রাম টক দই সালাদ বিকাল ৪টা : ১/২ টেবিল চামচ মধুযুক্ত ১ কাপ গ্রিন টি ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা যেকোনো প্ল্যান বেছে নিতে পারেন) ১/২ কাপ পপকর্ন (মাখন ছাড়া) ১/২ কাপ সিদ্ধ সুইট কর্ন ২ পিস স্টিমড ভেজ মোমো রাত ৯টা : ১টা সয়াবিন আটার রুটি (মেথি পাউডার মেশানো) ২ বাটি সবজি, সালাদ পিস মাছ বা চিকেন বা ৪ পিস টোফু রাত ৯টা ৩০ মিনিট :২০০ মিলি সয়া মিল্ক গৃ হি ণী দে র জ ন্য সকাল ৭টা : লেবুর রস এবং ১/২ টেবিলচামচ মধুযুক্ত হার্বাল টি ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সকাল ৯টা : মেথির পুর ভরা রুটি ১টি, ১ বাটি সবজি, সালাদ অথবা ১/৪ কাপ ওটমিল (জলে ফোটানো) সকাল ১১টা : ডিম পোচের সাদা অংশ অথবা ১/২ কাপ ছোলা সেদ্ধ, মুসম্বি বা কমলালেবু বা পেঁপে (১৫০ গ্রাম) দুপুর ১টা : ১টা ছোটকাপ ব্রাউন রাইস (৪০ গ্রাম) ১/২ কাপ ডাল (১৫ গ্রাম) ১ বাটি সবজি (আলু, মিষ্টি কুমড়া, বিট, কাঁচকলা ছাড়া যেকোনো সবজি) মাছ (৭০ গ্রাম) বা সয়াবিন (৪০ গ্রাম) দুপুর ৩টা :৫০ গ্রাম টক দই বিকাল ৫টা :১ কাপ চা, ১টি ক্রিমক্র্যাকার বা টোস্ট বিস্কিট সন্ধ্যা ৭টা :১/২ কাপ ছোলা সিদ্ধ বা ৫০ গ্রাম দই এবং অর্ধেক আপেল রাত ৯টা : ১টি সয়া আটা রুটি, ২ কাপ সবজি, সালাদ ৭০ গ্রাম মাছ বা ২০০ মিলি দুধ বা ৩ পিস টোফু।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Afrooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooooz
Drug Index
0 comments:
Post a Comment