ছোট্ট একটু ঘুম। সারা দিনের ব্যস্ততার ফাঁকে ঝিম ঝিম করতে থাকা মাথাটাকে একটু বিশ্রাম দেওয়া। ব্যথায় টনটন করতে থাকা শরীরটাকে একটু এলিয়ে দিয়ে চোখ বোজা। দিনের বেলায় এই ছোট্ট ঘুমটা দিতে শরীরের যতই আরাম লাগুক, এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবটা আসলে নেতিবাচক। চিন্তাধারা গুছিয়ে নেবার ক্ষেত্রে কিছুটা কাজে লাগে এই ঘুম, কিন্তু বেশি ঘুমের ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন জটিলতা, কমে যেতে পারে আয়ু। আর এর থেকে ডায়াবেটিস হবার বেশ ভালো সম্ভাবনা আছে।
দিবানিদ্রা নিয়ে গবেষণা
Sleep Medicine নামের জার্নালে দেখা যায়, নেদারল্যান্ডের লেইডেন ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা মানুষের শরীরের ওপরে দিবানিদ্রার প্রভাব নিয়ে বিশদ পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। বিভিন্ন সময়ে ঘুমের ফলে শরীর বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়। আর যারা দিবানিদ্রায় অভ্যস্ত তাদের সাথে তুলনা করা হয় যারা দিনে ঘুমান না তাদের স্বাস্থ্যের।
Sleep Medicine নামের জার্নালে দেখা যায়, নেদারল্যান্ডের লেইডেন ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের গবেষকরা মানুষের শরীরের ওপরে দিবানিদ্রার প্রভাব নিয়ে বিশদ পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। বিভিন্ন সময়ে ঘুমের ফলে শরীর বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়। আর যারা দিবানিদ্রায় অভ্যস্ত তাদের সাথে তুলনা করা হয় যারা দিনে ঘুমান না তাদের স্বাস্থ্যের।
গবেষণার খুঁটিনাটি
২৭ হাজার অবসরপ্রাপ্ত চৈনিক নারী-পুরুষের দিবানিদ্রার অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হয় এই গবেষণায়। এদেরকে চার ভাগে ভাগ করা হয় ঘুমের অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে। দিনের বেলায় শুন্য মিনিট (অর্থাৎ একেবারেই ঘুমান না) থেকে ৬০ মিনিট বা এক ঘণ্টার বেশি ঘুমান কারা কারা সেটা দেখা হয়।
২৭ হাজার অবসরপ্রাপ্ত চৈনিক নারী-পুরুষের দিবানিদ্রার অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করা হয় এই গবেষণায়। এদেরকে চার ভাগে ভাগ করা হয় ঘুমের অভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে। দিনের বেলায় শুন্য মিনিট (অর্থাৎ একেবারেই ঘুমান না) থেকে ৬০ মিনিট বা এক ঘণ্টার বেশি ঘুমান কারা কারা সেটা দেখা হয়।
অংশগ্রহণকারীদের মাঝে দুই তৃতীয়াংশের বেশি-মোটামুটি সাড়ে আঠারো হাজার মানুষ- জানান তারা নিয়মিত দিবানিদ্রা দেন। এরা রাতে কতটা ঘুমান, ধূমপান করেন কিনা, ব্যায়াম কিরকম করেন ইত্যাদি ব্যাপারও বিবেচনায় আনা হয়। এসবের পরেও দেখা যায়, যারা দিনের বেলায় নিয়মিত এক ঘণ্টার বেশি ঘুমান তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি বেশি থাকে।
তবে এক ঘণ্টার কম, বিশেষ করে আধা ঘণ্টার কম যারা ঘুমান তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি দেখা যায় না। অনেকের কাজের সুবিধার্থে “পাওয়ার ন্যাপ” বা ১০-২০ মিনিটের ঘুম দেওয়া উপকারী। কিন্তু নিয়মিত বেশি সময় ধরে দিবানিদ্রা মোটেই ভালো নয়।
দিবানিদ্রার সংস্কৃতি
বাংলাদেশে রয়েছে ভাতঘুমের একটা সংস্কৃতি। চীনেও সেরকম দিবানিদ্রা দেবার প্রবণতা আছে এবং সেখানে দুপুরে ঘুমানোটা উপকারি বলে মনে করা হয়। এ কারনেই তাদের মাঝে দেখা যায় নিয়মিত দিনে ঘুমানোর অভ্যাস। সপ্তাহের ৪-৬ দিন যারা ঘুমান তাদের মাঝে ডায়াবেটিসের প্রবণতা ৫০ শতাংশ বেশি দেখা যায়, যারা কম ঘুমান তাদের তুলনায়।
দিবানিদ্রা থেকে কেন ডায়াবেটিস হয়?
জানা তো গেল দিনে কতটা ঘুমালে ডায়াবেটিস হবার ভয় থাকে, কিন্তু এর কারন কি? ডায়াবেটিস আসলে শরীরের কিছু জটিলতার সমষ্টি। এসব জটিলতা আসে ইনসুলিনের অভাব থেকে। শরীর যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন করে না, ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। আরও একটা কারন হতে পারে, শরীরের কোষের ওপর ইনসুলিনের প্রভাব হ্রাস পেতে পারে। এ থেকেও ডায়াবেটিস হয়। এগুলোর সাথে দিবানিদ্রার সম্পর্ক কি? দেখা যায়, রাতে যথেষ্ট ঘুম না হলে ডায়াবেটিস হতে পারে। আর দিনে ঘুমালে রাতের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটে। আমাদের শরীরের ঘড়ি ওলটপালট হয়ে যায়। অনেক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ব্যহত হয়, যার মাঝে রয়েছে ইনসুলিনের নিঃসরণ। কম সময় ঘুমালে এই প্রভাব পড়ে না। বেশি সময় ঘুমালেই তা থেকে ডায়াবেটিস হবার আশঙ্কা বাড়ে।
0 comments:
Post a Comment