চর্বি
একটি
প্রয়োজনীয় খাদ্য
উপাদান। অনেকে
ভাবেন
চর্বি
খেলেই
হূদেরাগ হবে।
ব্যাপারটি তা
নয়।
প্রয়োজনীয় ও
পরিমিত
চর্বি
নিয়মিত
আহারের
অংশ
হতে
পারে।
এ
বিষয়টি
খতিয়েদেখাই আজকের
মূল
প্রতিপাদ্য
খাদ্যে চর্বি সম্বন্ধে প্রচলিত জ্ঞান ও ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। একসময় তেল ও চর্বি মানেই অস্বাস্থ্যকর, এমন একটি ধারণা ছিল। মনে করা হতো, তেল-চর্বি খেলে হয় হূদেরাগ ও ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগ। কিন্তু গবেষকেরা দেখেছেন, সব চর্বি ও তেলই মন্দ নয়, আছে চর্বির ভালো-মন্দ, আছে ভালো-মন্দ চর্বি। খাদ্যের চর্বিকে দুইভাবে দেখা যায়, স্যাচুরেটেড চর্বি ও আনস্যাচুরেটেড চর্বি। আনস্যাচুরেটেড চর্বি হলো শ্রেষ্ঠ। স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি খেলে যেসব রোগ হয়, সেই চর্বির বদলে আনস্যাচুরেটেড চার্বি খেলে সেসব রোগ অনেক কমে যায়। আর আনস্যাচুরেটেড চর্বিও দুই রকম— মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি। দুই ধরনের চর্বির হিতকরী প্রভাব রয়েছে রক্তের কোলেস্টেরল মানের ওপর। আমাদের রক্তেও রয়েছে মন্দ কোলেস্টেরল এবং ভালো কোলেস্টেরল। রক্তের এলডিএল হলো মন্দ কোলেস্টেরল। রক্তে এর মান বেশি হলে ধমনিতে চর্বি জমা হওয়া, পরবর্তীকালে করোনারি হূদেরাগের মতো বিপদ ঘটার আশঙ্কা। আবার রক্তে আছে ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল—এই কোলেস্টেরল বেশি থাকলে ধমনি ও টিস্যুতে জমা বাড়তি কোলেস্টেরল সরে আসে এবং যকৃৎ দিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, কমে রক্তের মন্দ কোলেস্টেরল। মন্দ ও ভালো দুই ধরনের কোলেস্টেরলের অনুপাতও দেখা জরুরি।
(এলএলডি: এইচডিএল অনুপাত) যত কম হবে তত ভালো। যেমন—এলডিএলের মাত্রা ১০০ মিলিগ্রাম বা ডিএল এবং এইচডিএলের মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম বা ডিএল হলে অনুপাত ২:১ এবং এই মাত্রাটি অবশ্য হূৎস্বাস্থ্যকর। তাই এলডিএল কম হলে, এইচডিএল বেশি হলে এবং এদের অনুপাত কম হলে—তা হবে হূদ্যন্ত্রের জন্য হিতকর।
মনোআনস্যাচুরেটেড চর্বি যেমন জলপাই তেল, সানফ্লাওয়ার ও তিলের তেল। যেমন কমায় রক্তের এলডিএল, তেমনি বাড়ায় হিতকর এইচডিএল। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি কমায় এলডিএল ও মোট কোলেস্টেরল মাত্রা, তবে এইচডিএল তেমন বাড়ায় না, ক্ষেত্রবিশেষে কমায়। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি আছে সয়াবিন তেল, কর্ন তেল, সানফ্লাওয়ার তেল, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম ও বীজে। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বির মধ্যে ওমেগা-৬ ও ওমেগা-৩—এই দুই ধরনের মেদ-অম্লের অনুপাতটিও গুরুত্বপূর্ণ। দুই ধরনের চর্বির রাসায়নিক গঠনটি শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে ভিন্নভাবে। খাদ্যে দুই রকম চর্বিই দরকার। এবং অনুপাত ১:১ হলে ভালো।
ওমেগা-৩ মেদ-অম্ল রয়েছে মাছের তেল, মাছ এবং সি-ফুডে—কমায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। ওমেগা-৬ মেদ-অম্ল রয়েছে সূর্যমুখী তেল, সানফ্লাওয়ার তেল—কমায় হূদেরাগের ঝুঁকি, তবে অ্যালার্জি ও প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ায়।
স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে ভালো চর্বি বলা যায় না। ধমনিতে চর্বি জমা হওয়ার পেছনে মাংস ও দুধের চর্বি বেশি খাওয়ার সম্পর্ক আছে।
গৃহতাপে এই চর্বি জমাট হয়ে থাকে। এ রকম চর্বি বেশি খেলে রক্তে বাড়ে মোট কোলেস্টেরল ও মন্দ কোলেস্টেরল।
তবে স্যাচুরেটেড চর্বি একেবারে বাদ দিলেও হবে না, এটি অবশ্য ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎসও বটে। অনেকে বলেন, উদ্ভিজ্জ কিছু স্যাচুরেটেড ফ্যাট হতে পারে কিছুটা হূদিহতকর: তাদের মেদ-অম্ল গঠন, রাসায়নিক সংযুতি ও বিপাকের ভিন্নতা দিতে পারে হিতকরী বৈশিষ্ট্য। পথ্যবিধি সম্বন্ধে যে নির্দেশ রয়েছে, এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে দৈনিক ক্যালরির সাত শতাংশের নিচে না নামাতে বলা হয়েছে।
নিকৃষ্ট চর্বি হলো ট্রান্সফ্যাট বা হাইড্রোজিনেটেড ফ্যাট। তরল উদ্ভিজ্জ তেলকে হাইড্রোজিনেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কঠিন চর্বিতে রূপান্তরিত করলে হয় ট্রান্সফ্যাট।
এ রকম চর্বি রয়েছে সব রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার—ফাস্টফুড, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই থেকে ডোনাট কেক, পেস্ট্রি, কুকিস ও বিস্কুটে। এই চর্বি পরিত্যাজ্য। এটি খেলে কেবল যে মোট কোলেস্টেরল ও মন্দ কোলেস্টেরল দুটোই বাড়ে তা-ই নয়, কমে হূদিহতকর এইচডিএলও। তাই এটি অবশ্যই বর্জন করা উচিত।
খাদ্যে চর্বি ও হূদেরাগ প্রসঙ্গ এবার। কিছু প্রশ্নও আসে স্বাভাবিকভাবেই। কতটুকু চর্বি খেলে তা স্বাস্থ্যকর হবে? চর্বিতে যে মেদ-অম্লগুলো আছে, এদের মধ্যে যে ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন, কোনটি হবে হিতকর? স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলোর মধ্যে কোনটি স্বাস্থ্যকর বেশি? এ রকম চর্বি খেলে কেমন হবে এর প্রভাব দেহের কোলেস্টেরল মাত্রার ওপর? প্রশ্নটি সহজ কিন্তু উত্তর বেশ জটিল, তবে ব্যক্তির ওপর চর্বিজাত এ রকম খাদ্যের প্রভাব দেখার একটি উপায়: তেমন খাদ্য গ্রহণের পর রক্তের মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল এবং এইচডিএলের এক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আবার এলডিএল বা এইচডিএল অনুপাতটিও নজর করা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
খাদ্যে কী পরিমাণ চর্বি থাকা উচিত? বিশ্বে স্বীকৃত সংস্থা এনসিইপি গাইডলাইন ও আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে চর্বি থাকা উচিত দৈনিক মোট ক্যালরির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ, কমের দিকে হলেই ভালো, তবে ২০ শতাংশের কম যেন না হয়।
প্রতিটি মেদ অণুতে রয়েছে তিনটি মেদ-অম্ল। এগুলো হলো স্যাচুরেটেড, মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড। এদের অনুপাত হওয়া উচিত ১:১:১, এস:এম:পি।
চর্বির এমন অনুপাত থাকলে এতে এলডিএল: এইচডিএল অনুপাত থাকে সর্বোত্তম। স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে একটু কম রাখারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে যে চার ধরনের স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে খাদ্যে, এর মধ্যে পামিটিক অ্যাসিড, যে অ্যাসিডটি রয়েছে উদ্ভিজ্জ পাম তেলে। একে অনেকটা গ্রহণীয় মনে করেন অনেকে। লিপিড প্রোফাইল ও এলডিএল বা এইচডিএল অনুপাতের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব তেমন লক্ষণীয় নয়, এমন বিবেচনা থেকেই। পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের মধ্যে এন-৬ ও এন-৩ পরিবারের চর্বির একটি সুষম ভারসাম্য রাখাও প্রয়োজন। তাই লাইনোলিক অ্যাসিড ও লাইনোনেলিক অ্যাসিডের একটি স্মার্ট ভারসাম্য (৭.১) রাখা হূদিহতকর, এমন ধারণা অনেকের।
খাদ্যে চর্বি সম্বন্ধে প্রচলিত জ্ঞান ও ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। একসময় তেল ও চর্বি মানেই অস্বাস্থ্যকর, এমন একটি ধারণা ছিল। মনে করা হতো, তেল-চর্বি খেলে হয় হূদেরাগ ও ডায়াবেটিসের মতো জটিল রোগ। কিন্তু গবেষকেরা দেখেছেন, সব চর্বি ও তেলই মন্দ নয়, আছে চর্বির ভালো-মন্দ, আছে ভালো-মন্দ চর্বি। খাদ্যের চর্বিকে দুইভাবে দেখা যায়, স্যাচুরেটেড চর্বি ও আনস্যাচুরেটেড চর্বি। আনস্যাচুরেটেড চর্বি হলো শ্রেষ্ঠ। স্যাচুরেটেড চর্বি বেশি খেলে যেসব রোগ হয়, সেই চর্বির বদলে আনস্যাচুরেটেড চার্বি খেলে সেসব রোগ অনেক কমে যায়। আর আনস্যাচুরেটেড চর্বিও দুই রকম— মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি। দুই ধরনের চর্বির হিতকরী প্রভাব রয়েছে রক্তের কোলেস্টেরল মানের ওপর। আমাদের রক্তেও রয়েছে মন্দ কোলেস্টেরল এবং ভালো কোলেস্টেরল। রক্তের এলডিএল হলো মন্দ কোলেস্টেরল। রক্তে এর মান বেশি হলে ধমনিতে চর্বি জমা হওয়া, পরবর্তীকালে করোনারি হূদেরাগের মতো বিপদ ঘটার আশঙ্কা। আবার রক্তে আছে ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল—এই কোলেস্টেরল বেশি থাকলে ধমনি ও টিস্যুতে জমা বাড়তি কোলেস্টেরল সরে আসে এবং যকৃৎ দিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, কমে রক্তের মন্দ কোলেস্টেরল। মন্দ ও ভালো দুই ধরনের কোলেস্টেরলের অনুপাতও দেখা জরুরি।
(এলএলডি: এইচডিএল অনুপাত) যত কম হবে তত ভালো। যেমন—এলডিএলের মাত্রা ১০০ মিলিগ্রাম বা ডিএল এবং এইচডিএলের মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম বা ডিএল হলে অনুপাত ২:১ এবং এই মাত্রাটি অবশ্য হূৎস্বাস্থ্যকর। তাই এলডিএল কম হলে, এইচডিএল বেশি হলে এবং এদের অনুপাত কম হলে—তা হবে হূদ্যন্ত্রের জন্য হিতকর।
মনোআনস্যাচুরেটেড চর্বি যেমন জলপাই তেল, সানফ্লাওয়ার ও তিলের তেল। যেমন কমায় রক্তের এলডিএল, তেমনি বাড়ায় হিতকর এইচডিএল। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি কমায় এলডিএল ও মোট কোলেস্টেরল মাত্রা, তবে এইচডিএল তেমন বাড়ায় না, ক্ষেত্রবিশেষে কমায়। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি আছে সয়াবিন তেল, কর্ন তেল, সানফ্লাওয়ার তেল, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম ও বীজে। পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বির মধ্যে ওমেগা-৬ ও ওমেগা-৩—এই দুই ধরনের মেদ-অম্লের অনুপাতটিও গুরুত্বপূর্ণ। দুই ধরনের চর্বির রাসায়নিক গঠনটি শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে ভিন্নভাবে। খাদ্যে দুই রকম চর্বিই দরকার। এবং অনুপাত ১:১ হলে ভালো।
ওমেগা-৩ মেদ-অম্ল রয়েছে মাছের তেল, মাছ এবং সি-ফুডে—কমায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। ওমেগা-৬ মেদ-অম্ল রয়েছে সূর্যমুখী তেল, সানফ্লাওয়ার তেল—কমায় হূদেরাগের ঝুঁকি, তবে অ্যালার্জি ও প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ায়।
স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে ভালো চর্বি বলা যায় না। ধমনিতে চর্বি জমা হওয়ার পেছনে মাংস ও দুধের চর্বি বেশি খাওয়ার সম্পর্ক আছে।
গৃহতাপে এই চর্বি জমাট হয়ে থাকে। এ রকম চর্বি বেশি খেলে রক্তে বাড়ে মোট কোলেস্টেরল ও মন্দ কোলেস্টেরল।
তবে স্যাচুরেটেড চর্বি একেবারে বাদ দিলেও হবে না, এটি অবশ্য ভিটামিন ও মিনারেলের ভালো উৎসও বটে। অনেকে বলেন, উদ্ভিজ্জ কিছু স্যাচুরেটেড ফ্যাট হতে পারে কিছুটা হূদিহতকর: তাদের মেদ-অম্ল গঠন, রাসায়নিক সংযুতি ও বিপাকের ভিন্নতা দিতে পারে হিতকরী বৈশিষ্ট্য। পথ্যবিধি সম্বন্ধে যে নির্দেশ রয়েছে, এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে দৈনিক ক্যালরির সাত শতাংশের নিচে না নামাতে বলা হয়েছে।
নিকৃষ্ট চর্বি হলো ট্রান্সফ্যাট বা হাইড্রোজিনেটেড ফ্যাট। তরল উদ্ভিজ্জ তেলকে হাইড্রোজিনেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কঠিন চর্বিতে রূপান্তরিত করলে হয় ট্রান্সফ্যাট।
এ রকম চর্বি রয়েছে সব রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার—ফাস্টফুড, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই থেকে ডোনাট কেক, পেস্ট্রি, কুকিস ও বিস্কুটে। এই চর্বি পরিত্যাজ্য। এটি খেলে কেবল যে মোট কোলেস্টেরল ও মন্দ কোলেস্টেরল দুটোই বাড়ে তা-ই নয়, কমে হূদিহতকর এইচডিএলও। তাই এটি অবশ্যই বর্জন করা উচিত।
খাদ্যে চর্বি ও হূদেরাগ প্রসঙ্গ এবার। কিছু প্রশ্নও আসে স্বাভাবিকভাবেই। কতটুকু চর্বি খেলে তা স্বাস্থ্যকর হবে? চর্বিতে যে মেদ-অম্লগুলো আছে, এদের মধ্যে যে ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন, কোনটি হবে হিতকর? স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটগুলোর মধ্যে কোনটি স্বাস্থ্যকর বেশি? এ রকম চর্বি খেলে কেমন হবে এর প্রভাব দেহের কোলেস্টেরল মাত্রার ওপর? প্রশ্নটি সহজ কিন্তু উত্তর বেশ জটিল, তবে ব্যক্তির ওপর চর্বিজাত এ রকম খাদ্যের প্রভাব দেখার একটি উপায়: তেমন খাদ্য গ্রহণের পর রক্তের মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল এবং এইচডিএলের এক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আবার এলডিএল বা এইচডিএল অনুপাতটিও নজর করা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
খাদ্যে কী পরিমাণ চর্বি থাকা উচিত? বিশ্বে স্বীকৃত সংস্থা এনসিইপি গাইডলাইন ও আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে চর্বি থাকা উচিত দৈনিক মোট ক্যালরির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ, কমের দিকে হলেই ভালো, তবে ২০ শতাংশের কম যেন না হয়।
প্রতিটি মেদ অণুতে রয়েছে তিনটি মেদ-অম্ল। এগুলো হলো স্যাচুরেটেড, মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড। এদের অনুপাত হওয়া উচিত ১:১:১, এস:এম:পি।
চর্বির এমন অনুপাত থাকলে এতে এলডিএল: এইচডিএল অনুপাত থাকে সর্বোত্তম। স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে একটু কম রাখারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে যে চার ধরনের স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে খাদ্যে, এর মধ্যে পামিটিক অ্যাসিড, যে অ্যাসিডটি রয়েছে উদ্ভিজ্জ পাম তেলে। একে অনেকটা গ্রহণীয় মনে করেন অনেকে। লিপিড প্রোফাইল ও এলডিএল বা এইচডিএল অনুপাতের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব তেমন লক্ষণীয় নয়, এমন বিবেচনা থেকেই। পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের মধ্যে এন-৬ ও এন-৩ পরিবারের চর্বির একটি সুষম ভারসাম্য রাখাও প্রয়োজন। তাই লাইনোলিক অ্যাসিড ও লাইনোনেলিক অ্যাসিডের একটি স্মার্ট ভারসাম্য (৭.১) রাখা হূদিহতকর, এমন ধারণা অনেকের।
তাই হূৎস্বাস্থ্যকর খাদ্যের সন্ধানে প্রথম পদক্ষেপ হলো আমেরিকার হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের।
পরামর্শ হলো:
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ট্রান্সফ্যাটি অ্যাসিড হওয়া উচিত মোটn ক্যালরির ১০ শতাংশের কম (হূদেরাগ থাকলে সাত শতাংশের কম)।
পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড হওয়া উচিত মোট ক্যালরির ৮ থেকে ১০n শতাংশ।
মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড মোট চর্বি গ্রহণের বাকিটা—মোট ক্যালোরিরn ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।
মোট চর্বি গ্রহণ ক্যালরির ৩০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়।n
কোলেস্টেরল গ্রহণ দৈনিক হওয়া উচিত ৩০০ মিলিগ্রামের কম।n
সোডিয়াম গ্রহণ দুই হাজার ৪০০ মিলিগ্রামের বেশি প্রতিদিন হওয়া ঠিক নয়।n
আমাদের খাদ্যে অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সঙ্গে সঙ্গে চর্বিও থাকা চাই। চর্বি হলো শক্তির উৎস। দেহকোষ ও স্নায়ুতন্ত্রের সুষ্ঠু কাজকর্মের জন্যও এদের প্রয়োজন। কিছু কিছু ভিটামিন শরীরে ঢোকার জন্য চর্বির উপস্থিতি চাই। আমাদের সুস্থ ত্বক ও কেশ থাকার জন্যও খাবারে চর্বি চাই। তীব্র শীতে শরীরকে তাপসুরক্ষাও দেয় চর্বি।
তবে খাদ্যে চর্বি থাকবে সীমিত, মোট ক্যালরি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের বেশি নয়। ২০ শতাংশের নিচে থাকা ঠিক নয়। বেশির ভাগ চর্বি থাকবে আনস্যাচুরেটেড। রান্নার সময় জমাট চর্বির বদলে তরল তেল ব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত। ঘি, ডালডার পরিবর্তে ভোজ্যতেল।
ননী তোলা দুধ ও দুধজাত খাবার, কচি মোরগের মাংস (বুকের মাংস), প্রচুর মাছ; সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ; শাকসবজি—এগুলোই স্বাস্থ্যকর। কেক, পেস্ট্রি, বিস্কুট, ডোনাট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ফাস্টফুড—এসবে আছে যে ভয়ংকর চর্বি ট্রান্সফ্যাট, একে বর্জন করা স্বাস্থ্যকর বটেই। ট্রান্সফ্যাটের বদলে তুলনামূলক বেশি স্বাস্থ্যকর স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
খাদ্যে চর্বি এড়ানো যাবে না, অতএব চর্বির ভালো-মন্দ যাচাই করেই খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
0 comments:
Post a Comment